ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

গ্যাস্ট্রিকের ঔষুধ খেয়ে হতে পারে ক্ষতিকর রোগ

আবুল উরওয়াহ

প্রকাশিত : ১২:২৫ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২০ শনিবার | আপডেট: ১২:৪২ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২০ শনিবার

আমাদের দেশে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অনেক ফার্মেসীতে প্রায় সব ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়। নিজের ইচ্ছে মতো ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ কিনে খেয়ে নিলেন। কিন্তু আপনি কি জানেন? ক্ষতিটা আপনার-ই হলো। এটা কখনো কেউ সহজে ভাবে না।

যেসব ঔষধ ব্যবস্থাপত্র ছাড়া সেবন করা যায় সেগুলোকে বলা হয় ওভার দ্যা কাউন্টার ড্রাগ বা (OTC) ড্রাগ বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিমান ঔষধ OTC আওতায় পড়ে।

আসলে ঔষুধ খেলে আমাদের উপকার ছাড়া কোন ক্ষতি নেই এমনটা বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে এইসব বিষয়ে শহরে বসবাসকারীদের কিছুটা জ্ঞান থাকলেও গ্রামের বসবাসকারীরা তুলনামূলক কমই জানে। আর গ্রামে যেহেতু ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া সহজেই ঔষধ পাওয়া যায়, তাই হরহামেশাই নিজের খেয়াল খুশিমতো ঔষধ খেয়ে যাচ্ছেন। এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো আসলে কতোটুকু ক্ষতি হচ্ছে তা সাথে সাথেই বুঝা যায় না এবং ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায় না আর এ জন্য সাধারণত মানুষ বুঝতেও পারে না।

সবচেয়ে কমন যে ঔষুধ গ্রামের লোকজন খেয়ে থাকে তা হলো অ্যান্টি আলসারেটিভ বা গ্যস্ট্রিকের ঔষধ। অনেক দিন থেকে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নিজের খুশি মতো খেয়েই চলেছেন।

পেট একটু ফেঁপে গেলে, পেটে একটু ব্যাথা অনুভব হলে, বুকে অস্বস্তি হলে, বুকে সামান্য ব্যাথা হলে,পেট ভারি হলে, ঢেকুর উঠলে, পায়খানায় একটু সমস্যা হলে অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই চোখ বন্ধ করে আলসারের ওষুধ খেয়ে নেন। যেন নিজেই নিজের চিকিৎসক। আবার এই ঔষুধ আরেকজন খাওয়ার পরামর্শ দেন এটি চরম ক্ষতি।

আলসারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় অ্যান্টাসিড, ওমেপ্রাজল, র‍্যাবিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল এবং ইসোমেপ্রাজল ইত্যাদি। সম্প্রতি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর রেনিটিডিন নিষিদ্ধ করেছেন। এইসব ঔষুধের নামগুলো অনেক মানুষেরই মুখস্ত। আর ফার্মেসীতে গেলেই এই ঔষুধগুলো পাওয়া যায়।

দীর্ঘদিন গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবনে শরীরে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে:
১. সাধারণত আলসারের ঔষধ ওমিপ্রাজল বেশিদিন একটানা খাওয়ার ফলে অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানা গেছে।
২. ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।
৩. কমে যেতে পারে রক্তে ক্যালসিয়াম বা ম্যাগনেসিয়াম ফলে হতে পারে বিভিন্ন সংক্রমণ।
৪. পেটের সমস্যায় অনেকে অ্যান্টাসিড খেয়ে থাকেন। অ্যান্টাসিডের বিভিন্ন উপাদান ভেদে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া।

ঔষুধ খাচ্ছেন অসুখ সারানোর জন্য, কিন্তু সেই ঔষধই যদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তবে তা আসলেই মহাবিপদের কথা। যে বিষয়গুলো সাধারণ মানুষ সহজে মানতে নারাজ। তবে হ্যাঁ কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই খেতে হবে তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করবেন না। ইচ্ছে মতো যেকোন ঔষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। নিজে সচেতন হোন।

এমবি//