বাউফলের চরাঞ্চলে আমন চাষের ধুম
বাউফল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:০০ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২০ শনিবার
বীজতলা থেকে আমন ধানের চারা তুলছেন কৃষকরা। ছবি: একুশে টেলিভিশন
ভারিবর্ষণ আর অমাবস্যার অতিজোয়ারে প্লাবিত চর ও নিম্নাঞ্চল থেকে পানি কমে যাওয়ায় আমন চাষে ধুম পড়েছে পটুয়াখালীর বাউফলে। পানি নামতে থাকায় সাগরের লঘুচাপের প্রভাবে ২০ হাজার হেক্টর জমির আমনের বীজতলা পানিতে ডুবে যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় এখানকার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, এ বছর প্রায় ৩৭ হাজার হেক্টর জমির আমনের বীজতলা তৈরির লক্ষমাত্রা নির্ধারিত হয়। এতে রয়েছে ১৯ হাজার ৫শ’ হেক্টরে স্থানীয় জাতের এবং ১৬ হাজার ৫শ’ হেক্টরে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজতলা।
পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চরাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় চাঙা হচ্ছে কৃষক। আমন রোপণের কাজে এখন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মূল ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বীপের চরমিয়াজান ভান্ডারিবাজার এলাকায় অর্ধশতাধিক কৃষি শ্রমিককে বীজতলা থেকে আমন ধানের চারা তুলতে।
এ সময় কৃষক শাহআলম হাওলাদার, আব্দুল আলী, ছালাম, রত্তনসহ কয়েকজন প্রান্তিক কৃষকরা জানান, এর আগে অতি বৃষ্টির মতো কয়েক দফার দুর্যোগের কারণে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়। সরকারি ভর্তুকি মিলিয়ে বিএডিসির নির্ধারিত ডিলারের বিভিন্ন খরচের কারসাজিতে ২৯০ টাকার ১০ কেজির প্রতি প্যাকেটের আমনের বীজ ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় কিনতে হয়েছে তাদের।
শেষের দিকে এসে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকাতেও বীজধান না পাওয়ায় অনেকেই নিজস্ব পদ্ধতিতে বুনেন বীজতলা। সর্বশেষ জোয়ারের পানি আর ভারি বর্ষণে মাঠঘাট আর বীজতলার ৩-৪ ফুট উচ্চতার পানিতে ভেসে যাওয়ায় আবারও ক্ষতির মুখে পড়ে চর ও নিম্নাঞ্চলের কৃষক। চর আর নদী পাড়ের বেড়িবাঁধের বাহির থেকে পানি নেমে যেতে থাকায় নিম্নাঞ্চলের বীজতলার কিছুটা ক্ষতি হলেও শঙ্কা কমেছে কৃষকের।
বড়ডালিমা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির মৃধা বলেন, ‘আমন মৌসুমে এই বছর দফায় দফায় নামছে বিপর্যয়। বৃষ্টি-জোয়ারের পানিতে নীচু জমির বীজতলা ক্ষ্যাত পইচক্যা গ্যাছে। এমন বিপদে সরকারি সাহায্য পাইলে কৃষকগো উপকার অইতে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে টানা বর্ষণ আর অতিজোয়ারের পানিতে তলিয়ে পটুয়াখালীর বাউফলে পেঁপেসহ ৫ কোটি টাকা গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে। সামান্য ক্ষতি ও কিছু পরিমাণ আংশিক ক্ষতি হয়েছে আমনের বীজতলার। অতিরিক্ত বীজতলা তৈরি আর পানি নামতে থাকায় বীজতলার এই ক্ষতির পরিমাণ কমে ১ পার্সেন্টে নামবে। উপজেলার চরাঞ্চরের কৃষক-কৃষাণী এখন আমন চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।’
এএইচ/এমবি