ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সিনহা হত্যা : জবানবন্দি দিতে আদালতে লিয়াকত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:০০ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০২০ রবিবার

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি পুলিশের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে তোলা হয়েছে। তৃতীয় দফা তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার একদিন পরেই জবানবন্দি দিচ্ছেন তিনি। 

আজ রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে তাকে আনা হয়। মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা যায়, গত শুক্রবার (২৮ আগস্ট) বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এএসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতকে তৃতীয়বারের মতো তিন দিনের রিমান্ড দেন আদালত। জিজ্ঞাবাদ শুরুর একদিন পরই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য এসআই লিয়াকত আলীকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আদালতে আনা হয়।

এর আগে আত্মসমর্পণের পর গত ৬ আগস্ট প্রথম দফায় সাত দিনের রিমান্ডে নেয় মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। ২৪ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় আরও সাতদিনের রিমান্ড চাইলে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে তদন্তের স্বার্থে তৃতীয় দফা আরও চারদিনের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে, আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এদিকে, পুলিশের দায়ের করা মামলায় ফের ৪ দিনের রিমান্ড পাওয়া তিন সাক্ষীকে জিজ্ঞাবাসাদের জন্য গতকাল শনিবার হেফাজতে নিয়েছে র‌্যাব।  

গত ২৫ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম তাদেরকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক তামান্না ফারাহ্।

এরও আগে গত ২০ আগস্ট প্রথম দফায় তাদের সাত দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছিল। মেজর সিনহা খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ১১ আগস্ট মারিশবুনিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ দিয়ে হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা হয়। ২টি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। সরকারি কাজে বাধা দানের মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। হত্যাচেষ্টা মামলায় সিফাত ও নিহত সিনহাকে আসামি করা হয়। 

আপরদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে। একই ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরের দিন ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এ মামলার অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও মো. মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। পুলিশের দাবি, এই নামে জেলা পুলিশে কেউ নেই। তবে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

সিনহা হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।
এআই/এসএ/