করোনা আক্রান্তে বিশ্বে বাংলাদেশ ১৫তম (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
করোনা সংক্রমণের ২৫ তম সপ্তাহ পার করেছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে বিশ্বে আক্রান্ত বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম, এশিয়ায় তৃতীয়। তবে, সারাবিশ্বের মতোই বাংলাদেশেও সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার কমছে-বাড়ছে। তাই, ভয় কাটিয়ে অনেকটা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে নয়। অনুমান করা যাচ্ছে না সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি। তাই স্বাস্থবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাড়াতে হবে মাঠ পর্যায়ে। প্রকোপ ঠেকাতে সতর্কতা শিথিল না করার পরামর্শও তাদের।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যু দশদিন পর ১৮ মার্চ। রোগীর সংখ্যা একশ’র ঘরে পৌঁছায় ৬ এপ্রিল, হাজার অতিক্রম করে ১৪ এপ্রিল। ১৮ জুন ১০৩ দিনের মাথায় যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা লাখে পৌঁছায়, সেখানে দুই লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ৩০ দিন। ফলে সংক্রমণ বাড়ার সাথে বেড়েছে পরীক্ষার পরিসর।
জুলাইয়ে রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও করোনা পজিটিভ শনাক্তের হার ছিল ২০ শতাংশ। আগস্টের শুরুতে কমে আসে মৃত্যু সংখ্যা। এরপর আবার বাড়তে থাকে। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনার প্রাণহানি ঘটেছে ৪ হাজার ২৮১ জনের। আক্রান্ত ৩ লাখ প্রায় ১৩ হাজার।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, করোনা সংক্রমণের দিক দিয়ে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। সক্রিয় করোনা রোগীর বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশ নবম। এসব পরিসংখ্যান সত্ত্বেও, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
জানতে চাইলে চিকিৎসা বিজ্ঞানি অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ‘দেশে সংক্রমণের সঠিক তথ্যই আমরা জানিনা। সামান্য কিছু নমুনা পরীক্ষা করছি, তারপর বলছি এতজন আক্রান্ত। এর মাধ্যমে সঠিক তথ্য উঠে আসছে না। ফলে, বাংলাদেশ করোনার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না।’
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া এবং নেপালে রোগী বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে সংক্রমণের গতি ততটা তীব্র নয়। আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘প্রথম থেকে বাংলাদেশে ধীরগতির সংক্রমণ চলছে। দেশে যে হারে এখনও শনাক্ত ও প্রাণহানি ঘটছে তা বিপদসীমার ওপরে। সামান্য কম হলেও আশ্বস্ত হওয়ার কোন কারণ নেই, যেকোন সময় সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। তাই, শনাক্তের হার অন্তত ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশসহ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছি। এতে ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’
২৬ মার্চ থেকে লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ায় উচ্চ হারে সংক্রমণ ছড়ায়নি। গবেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের সংক্রমণ প্রবণতা হলো, আজ বাড়লে কাল কমে। তাই ভবিষ্যৎ অনুমান করা কঠিন।
গণপরিবহন স্বাভাবিক, দোকানপাট খোলা, অফিস চলছে যথা নিয়মে।, একারণে মানুষ এখন আর করোনাকে ভয় পায় না। ফলে স্বাস্থবিধির প্রতিও যত্নশীল নয়। এমন পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষাসহ করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এআই/এমবি