৩৫ দিন বয়সি শিশুর করোনা জয়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৪০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
জন্মের পরপরই ১ কেজি ৩২০ গ্রাম ওজনের এক শিশুর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পরে। ৬ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৫ দিন বয়সী ওই শিশু করোনার সঙ্গে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছে। তার এই লড়াই সহজ ছিল না। এই সময়ে সে পায়নি মায়ের কোন স্পর্শ। চিরতরে হারাতে হয়েছে যমজ বোনকে। করোনামুক্ত হয়ে সেই শিশুপুত্র যখন দাদা-দাদীর সঙ্গে বাড়ির পথে রওনা দিচ্ছে, তখন তার ৩০ দিনের সঙ্গী স্বাস্থ্যকর্মীদের চোখও ভিজে যাচ্ছিল খুশিতে।
ঘটনাটি ভারতের কোলকাতায়। সেখানকার গিরিশ পার্কের এক গর্ভবতী মহিলার ৫ আগস্ট রাত থেকে পেটে ব্যথা শুরু হলে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসক। ৩১ সপ্তাহের মাথায় ওই প্রসূতি জন্ম দেন যমজ কন্যা ও পুত্র সন্তান। একজনের ৫০০ গ্রাম ও অন্যজনের ওজন ছিল ১ কেজি ৩০০ গ্রাম। দু’দিন পরে কোভিড পরীক্ষা করানো হয় ওই মায়ের। রিপোর্ট আসে পজিটিভ।
এর ৪ দিনের মাথায় ভেন্টিলেশনে থাকা কন্যা সন্তানের মৃত্যু হয়। সেদিনই পুত্রসন্তানের কোভিড পরীক্ষা করা হলে তারও পজিটিভ রিপোর্ট আসে। মা ও শিশুকে এর পরে দুটি আলাদা বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মায়ের কোনও উপসর্গ না থাকায় তাকে কয়েকদিন পর ছেড়ে দেয় হাসপাতাল। ১৪ দিন হোম আইসোলেশনে থাকার পরে ৩০ আগস্ট ফের পরীক্ষা করালে তার রিপোর্ট আসে নেগেটিভ।
ওই দিনই শিশুটিরও চতুর্থ বারের মতো কোভিড পরীক্ষা করা হয়, রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। শেষ রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও তাকে ছেড়ে দেওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় হৃৎপিণ্ডের অতিরিক্ত গতি। চিকিৎসার পরিভাষায় যাকে বলে ট্র্যাকিকার্ডিয়া। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চিকিৎসা। তাতে খুব ভাল সাড়া দিয়েছে করোনা লড়াকু ছোট্ট শিশুটি।
প্রায় ৩০ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তার পরিবারের কাছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শিশুটিকে যখন আনা হয়েছিল তখন তার শ্বাসকষ্ট ছিল। করোনার জন্য ১৮ দিন টানা অক্সিজেন দিতে হয়েছে তাকে। ওই সদ্যোজাতকে ভর্তির নয় দিন পরে দ্বিতীয় পরীক্ষা ও তারপরে আরও একটি পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল।
গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালে সন্তানকে দুধ খাওয়াতে আসছিলেন শিশুটির মা। কোলে তুলে এ দিন শুধুই হাত বুলিয়ে ছেলের গায়ের গন্ধ শুঁকছিলেন। সেই গন্ধে যেন আরও একজনকে খুঁজছিলেন তিনি।
সূত্র: আনন্দবাজার
এএইচ/এমবি