ইলিশে সয়লাব বাগেরহাটের কেবি বাজার, নেই স্বাস্থ্যবিধি
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:৫১ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার
বাগেরহাট শহরের দড়াটানা নদীর পাশে ইলিশ ও সাগরের বিভিন্ন মাছের পাইকারি আড়ৎ কেবি বাজারে গিয়ে দেখা যায় সহস্রাধিক মানুষের ভিড়। কেউ মাছ দেখছে, কেউ কিনছে, কেউ আবার দাম বলে চলে যাচ্ছেন। অনেকে বিভিন্ন পরিবহনে মাছ উঠাচ্ছেন, কেউবা ঝুড়িতে বরফ দিয়ে মাছ সাজাচ্ছেন।
দড়াটানা নদীতে রাখা ট্রলার থেকে ঝুড়ি ও ঝাকায় করে রুপালি ইলিশ নিয়ে নির্দিষ্ট আড়ৎ ঘরের সামনে ঢালা হচ্ছে বিক্রি করার জন্য। সবাই যেন মহাব্যস্ত এই মাছের বাজারে। তবে কারও মুখেই নেই মাস্ক কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই।
গত তিন-চারদিন ধরেই এভাবে কেবি বাজারে ইলিশের আমদানি অনেক বেশি। দাম ও বিক্রি দুটিই ভাল। যার ফলে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও জেলেরা।
আসেন নিয়ে যান, অল্প দামে বড় মাছ। এদিকে আসেন, এখানে ভাল মাছ। কেজি কেজি মাছের পোন (৮০ পিস) ৫০ হাজার, ৬শ-৭শ গ্রামের পোন মাত্র ৩৫ হাজার টাকা। ভোর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেবি বাজার পাইকারি আড়তে ইলিশ বিক্রির জন্য এভাবেই হাকডাক দিচ্ছেন আড়তদাররা। বিক্রিও হচ্ছিল ভাল। তবে জেলার অন্যতম ইলিশের এই পাইকারি বাজারে চলমান করোনা সংকটাবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা নেই। বেশির ভাগ মানুষই মাস্ক ছাড়া। সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি যেন কেউ জানেনই না।
মাছ বিক্রি করতে আসা জেলে ননী গোপাল বলেন, ‘এবার সাগরে ভাল মাছ পেয়েছি। মাছের আকারও বড়। তাই দামও মোটামুটি ভাল পেয়েছি। তবে আধা কেজি ওজনের উপরের বেশির ভাগ মাছের পেটে ডিম রয়েছে।’
আরেক ব্যবসায়ী লতিফ খান বলেন, ‘এবার মাছের চেহারা ও ওজন দুটোই পূর্বের তুলনায় অনেক ভার। দুই-তিনদিন ধরে ১ কেজি ওজনের মাছ ৬ থেকে ৮শ টাকা এবং ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪শ’ টাকায়। এর মাঝামাঝিগুলো সাড়ে ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’
সুমন হাওলাদার, রিয়াদ হোসেনসহ কয়েক জন মাছ ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে আসছি। মাছ দেখে পছন্দ হয়েছে, কিনেছি। কিন্তু অনেক ভোরে বাজার শুরু হওয়ায় আসতে একটু কষ্ট হয়।’
স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে জানতে চাইলে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারে অনেক ভিড়। দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। এর মাঝে স্বাস্থ্যবিধি আর মাস্ক এসব বাদ দেন।’
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. মো. খালেদ কনক বলেন, ‘ইলিশ রক্ষার জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এসব কারণে ঝাটকা নিধন রোধে একাধিক অভিযানও করেছি আমরা। মাছ আহরণে নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সহায়তাও করা হয়েছে। যার ফলে ইলিশের আকার ও পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে সাগর ও নদীতে।’
স্বাস্থ্য বিধির বিষয়ে ড. মো. খালেদ কনক বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমরা মাইকিং করেছি। বাজার সমিতির দায়িত্বশীলদের সাথে সভা করেছি। স্বাস্থ্যবিধির গুরুত্ব বুঝিয়েছি জেলেদের। তারপরও অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এ বিষয়ে আমরা আরও কঠোর হওয়ার চেষ্টা করছি।’
এআই/এমবি