ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

৭ম বারের মত ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার পেল এটুআই  

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২৫ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

টানা ৭ম বারের মত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২০’ অর্জন করেছে এটুআই-এর দু’টি উদ্যোগ। ই-বিজনেস ক্যাটাগরিতে ‘একশপ’ এবং ই-এমপ্লয়মেন্ট ক্যাটাগরিতে ‘দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিষয়ক সমন্বিত ইন্টিলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম’ চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার অর্জন করেছে।

বিশ্বের শতাধিক দেশ থেকে প্রাপ্ত আবেদন থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাছাই ও অনলাইন ভোটিং প্রক্রিয়া শেষে অনলাইনে চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মোট ১৮টি ক্যাটাগরিতে আবেদন গ্রহণ করা হয়, যেখানে মোট ৭৬২ সাবমিশন থেকে ৩৫৪টি প্রকল্পকে নমিনেশন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭২টি প্রকল্প চ্যাম্পিয়ন এবং ১৮টি প্রকল্প উইনার হয়, যার মধ্যে বাংলাদেশের ০২ টি প্রকল্প চ্যাম্পিয়ন এবং ০১ টি প্রকল্প উইনার হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

তথ্য প্রযুক্তি খাতে ব্যক্তি, সরকারি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক এজেন্সি, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে নানা উদ্ভাবনের জন্য প্রতিবছর জাতিসংঘের আইসিটি সংক্রান্ত বিশেষায়িত সংস্থা আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার প্রদান করে থাকে। সারাবিশ্বে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির ফলে এবছর ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানটি অনলাইনে আয়োজন করা হয়েছে। বিজয়ীদের ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট প্রেরণ করা হয়েছে। আইটিইউ কর্তৃপক্ষ আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০  বিজয়ী প্রকল্পসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনলাইনে একটি ইন্টারেক্টিভ সেশন আয়োজন করেছে। উক্ত অনুষ্ঠানে এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মোঃ আব্দুল মান্নান পিএএ এবং এটুআই-এর টিম লীড (রুরাল ই-কমার্স) রেজওয়ানুল হক জামি অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
 
ড. মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, বর্তমান সংকটকালীন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের এটুআই টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল বিষয় নিয়ে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভার্চুয়াল ক্লাস চালু করেছে। তিনি আরো বলেন, পর পর ৭ বছর প্রযুক্তি খাতে অস্কার বলে পরিচিত এই ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার অর্জন করায় আমরা গর্বিত। তিনি এটুআই-এর উদ্যোগ দু’টির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।   

রেজওয়ানুল হক জামি তাঁর বক্তব্যে একশপের মাধ্যমে গ্রামীণ উদ্যোক্তার জীবন কিভাবে পরিবর্তন হয়েছে তা সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একশপ বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার একমাত্র পরিবেশক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে করে গ্রামের জনগণ প্রযুক্তি সহায়তায় খুব সহজেই ডিজিটাল মার্কেটের সাথে যুক্ত হতে পারছে। তিনি আরো যুক্ত করে বলেন একশপ জনগণের দোরগোড়ায় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে আসছে। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রোগ্রাম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা সহজিকরণে কাজ করে যাচ্ছে। এটুআই এর উদ্যোগ ‘একশপ’ (ekshop.gov.bd) হলো সহজ ও দ্রুত সময়ে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম রুরাল অ্যাসিস্টেড ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। ইতোমধ্যে ৫ লক্ষেরও অধিক গ্রাহক একশপের মাধ্যমে ই-কমার্স সেবা গ্রহণ করেছে। একশপ দেশীয় কারিগরদের পণ্য সারাদেশে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ১০ লক্ষেরও অধিক পণ্য প্ল্যাটফর্মে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বর্তমানে ১,৫৩১ জন গ্রামীণ কারিগর একশপের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করছে। ইতোমধ্যে একশপ ৬.৫ লক্ষেরও অধিক পণ্য ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। অন্যদিকে দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিষয়ক সমন্বিত ইন্টিলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম (skills.gov.bd) হলো ট্রেনিং সেন্টার, ইন্ডাস্ট্রি ও যুবকদের-এর একটি ম্যাচ-মেকিং প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি তার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী নির্বাচন, ট্রেনিং সেন্টার যুগোপযোগি অকুপেশনে প্রশিক্ষণ এবং যুবকদের দক্ষতা অনুযায়ী জব প্লেসমেন্ট করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের বড় ধরণের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটুআই প্রোগ্রাম কর্তৃক জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত অসংখ্য উদ্ভাবনী উদ্যোগের মধ্যে বিগত ৫ বছর যথাক্রমে ২০১৪ সালে ‘ডিজিটাল সেন্টার’; ২০১৫ সালে ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’; ২০১৬ সালে ‘সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ-এসপিএস’, পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘অনলাইন ছাড়পত্র’, ‘শিক্ষক বাতায়ন’ এবং ‘কৃষকের জানালা’; 2017 সালে ‘মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টেলিমেডিসিন প্রকল্প’, ‘নাগরিক সেবা উদ্ভাবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার’ ও ই-নথি; ২০১৮ সালে ‘মুক্তপাঠ’ ও ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ এবং ২০১৯ সালে ‘শিক্ষক বাতায়ন’ ও ‘মোবাইল বেইজড এইজ ভেরিফিকেশন বিফোর ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন টু স্টপ চাইল্ড ম্যারেজ প্রজেক্ট’ ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডাব্লিউএসআইএস) পুরস্কার অর্জন করেছে।

আরকে//