করোনাকালে দরকার মানসিক প্রশান্তি
প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী
প্রকাশিত : ০৯:৫০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার
প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী
করোনাভাইরাস মানুষের মনস্তাত্ত্বিক জীবনবোধ এবং জীবিকার ওপর দারুণ প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। বৈশ্বিক এ সমস্যাটি আজ দেশে দেশে মানুষের মধ্যে কেবল মৃত্যুর হিমশীতল ছায়াই শুধু নয়, বরং কারও কারও মধ্যে অমানবিকতার দৃষ্টান্তকে জাজ্বল্যমান করে তুলেছে। সাধারণ আম-জনতা আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই হাসপাতালে ছায়া পারতপক্ষে মাড়াতে চায় না। অথচ সরকার কোভিড রোগাক্রান্তদের চিকিৎসাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিল। বেসরকারী হাসপাতালে যে মোটা অঙ্কের বিল আসে তা মেটানো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
এদেশে স্বাস্থ্যবীমা কখনও প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। এর নানাবিধ কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে বীমাকৃত টাকা পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গত এগারো বছরের অধিককাল টেলিমেডিসিনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। স্যাটেলাইট ক্লিনিকের কথা বেশ জোরেশোরে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ঘোষণা করেছিল। কিন্তু করোনাকালে দেখা গেল, এগুলো তেমন কাজে আসছে না। বহু জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিক ও চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে যথাযথ চিকিৎসা দেয়নি। স্বাস্থ্য খাতকে, চিকিৎসা দিয়ে এখন বরং মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকার প্রয়াস নিয়েছে। তার পরও মানুষ আজকাল বাসায় থেকে ওষুধ সেবন করতে পছন্দ করছে। কেননা তারা তো জানে না যিনি চিকিৎসা দেবেন তার মধ্যে মানবিকতা আছে কিংবা নেই। এমনিতেই অস্থির করোনাকালে ভোগবাদী সমাজ ব্যবস্থায় একদল ধান্ধাবাজ মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সবসময় দলমত নির্বিশেষে ধান্ধায় লিপ্ত থাকতে পছন্দ করে। তার পরও সরকারের সাফল্য যে, তাদের সৎ উদ্দেশ্যের কারণে করোনায় কেউ অভুক্ত থেকে মারা যায়নি। এদিকে নারায়ণগঞ্জের বায়তুস সালাত জামে মসজিদে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর পর তিতাসের আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় গ্যাস লাইনের সমস্যা যদি সত্যি মিটিয়ে না থাকে, তবে এ নৃশংস ঘটনা ঘটত না।
সরকার তার সাধ্য মতো প্রয়াস গ্রহণ করেছে, যাতে সত্যিকার অর্থে একটি ভাল টিকা আবিস্কার হলে এদেশের মানুষের জন্য তা পায়। সরকারের এ সাধু উদ্দেশ্য যাতে বাস্তবায়ন হয় সে জন্য যারা বাস্তবায়নকারী তাদের ওপরই দায়িত্ব বর্তায়। দুর্ভাগ্যজনক হলো সরকারপ্রধানের অনেক জনহিতকর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পর্যায়ে এসে পাল্টে যায়। কটেজ, স্মল, মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজের যে প্রণোদনা প্যাকেজ ছিল, তার পনেরো শতাংশ অন্তত গ্রামীণ এলাকায় দেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সম্প্রতি এই বাধ্যবাধকতা ব্যাংকগুলোর ওপর থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। যেখানে গত ১১ বছরের অধিককালে যে উন্নয়ন হয়েছে তা মূলত গ্রামীণ অবকাঠামোর অর্থনীতি নির্ভর করে। কৃষি ও কৃষিজ শিল্পের ওপর নির্ভর করে, সরকারপ্রধান সুস্পষ্টভাবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে সাহায্য করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেখানে এ ধরনের নির্দেশনা সরকারের প্রয়াসের সঙ্গে মিলতে দেখা যায় না। দেশে আজ যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন তা গ্রামীণ অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে। করোনায় কিন্তু গ্রামীণ অর্থনীতি নির্ভর সিএসএমই খাতটিতে বেশ বড় রকমের ধাক্কা লেগেছে। এদেশের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিদের অধিকাংশের অবস্থান হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায়। সে সমস্ত এলাকায় যদি জামানতবিহীন সরল সুদে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকসমূহকে বাধ্য করা যেত, তবে তা দেশের উন্নয়নের গতিকে সঠিক দিকনির্দেশনায় ধারণ করত বলেই বিশ্বাস করি। অথচ করোনার প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই সরকারপ্রধানের বিশেষ প্রয়াসে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এক লাখ এগারো হাজার এক শ’ সাঁইত্রিশ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক ও অভিনন্দনযোগ্য ঘটনা। তবে এখন দেখা যাচ্ছে প্যাকেজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যারা উচ্চবিত্ত ও ধনবান শ্রেণী তারা যে গতিতে সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন, সে তুলনায় প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র শ্রেণী কিন্তু প্যাকেজের সুফল পাচ্ছে না। কেননা, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র শ্রেণীর ক্ষেত্রে প্যাকেজের অর্থ ছাড় করতে দেরি করছে। অন্য একটি গবেষণা করতে গিয়ে ইতোপূর্বে দেখেছিলাম, গ্রামীণ অঞ্চলের শাখা ব্যবস্থাপকেরা সচরাচর ব্যক্তিগত পর্যায়ে উদ্যোক্তা তৈরি অর্থায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্ব না দিয়ে বেসরকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে বেশি তৎপর থাকে।
গবেষণার সময়ে আরেকটি তথ্য পেয়েছিলাম, যে সমস্ত গ্রামের অধিবাসীরা প্রবাসে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে যত না ভোগ্যপণ্যজাত ঋণ বিতরণে ব্যাংকাররা সচেষ্ট থাকেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ঋণ চাইলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাধা দেন। এটি আসলে কখনও দূর করা যায়নি। ব্যাংকারদের বর্তমান প্রজন্মের ক্ষেত্রে মাইন্ডসেট (গরহফ ঝবঃ) হচ্ছে স্বল্প পরিশ্রমে বেশি ঋণ দেখানো। ফলে করোনাকালেও বিত্তশালীরা যেখানে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের সুবিধা পাচ্ছেন, সেখানে সরকারী সদিচ্ছা সত্ত্বেও এক শ্রেণীর ব্যাংকারের কারণে প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। এটির যেমন মনস্তাত্ত্বিক দিক রয়েছে তেমনি ঘুরে দাঁড়াতে অসহযোগিতা করছে। ব্যাংকাররা নারী উদ্যোক্তাদেরও ঋণ দিতে পছন্দ করেন না বলে গবেষণায় দেখেছি। যেখানে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং সাধারণ জনমানুষের কিভাবে ভাল হয় সে ব্যাপারে বদ্ধপরিকর, সেখানে যারা বাস্তবায়ন করবেন তারা যদি সঠিকভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন না করেন, অবশ্যই জবাবদিহির পর্যায়ে আসতে হবে তাদের। কেননা ব্যাস্টিক অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে একটি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি সুসংহত হওয়া প্রয়োজন। সামষ্টিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গেলে, মানুষের আয় প্রবাহ বাড়াতে হলে অবশ্যই কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই। বেসরকারী খাতে সেখানে অধিকতর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, শ্রমবাজার সৃষ্টি করা যায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সুষম বণ্টন ব্যবস্থা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে জোরদার করতে সরকার অনেক বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে সমস্যা হলো যখন বাস্তবায়নের বিষয়টি সামনে আসে, তখন অনেকেই এ ব্যাপারে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন না। অনেকে কনসালটেন্সি, বিভিন্ন সংস্থার হয়ে নানামুখী গুজব রটিয়ে থাকে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মিথ্যার বেসাতী করে সামাজিক সমস্যা তৈরিতে কেউ কেউ প্রয়াস গ্রহণ করে বলে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
করোনা মোকাবেলায় সরকার ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে চলেছে। তবে বাস্তবায়নকারীদের মধ্যে জবাবদিহি, ন্যায়পরায়ণতা ও সততার বীজ বপন করতে হবে। কেনাকাটায় অনেক কর্মকর্তাই খুব খুশি থাকেন। অথচ সে পণ্য বছরের পর বছর ব্যবহার হবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় থাকে। কেনাকাটার প্রতি কেন এই দুর্বলতা তা খুঁজে বের করা দরকার। নইলে ইতিবাচক ফল আসবে না। আচরণগতভাবে আমরা যতক্ষণ না ন্যূনতম সততা, নৈতিকতার পরিচয় দেব ততক্ষণ আমরা দেশ ও জাতির উন্নয়নকল্পে নিষ্ঠার পরিচয় দিতে পারব না। সুযোগ সন্ধানীরা পেঁয়াজের দাম আবার বাড়াতে সচেষ্ট। আবার কখনও কখনও এমন সব বক্তব্য তথাকথিত সুশীল সমাজ থেকে শুনি যা অনভিপ্রেত। একজন একটি পত্রিকার প্রথম পাতায় তার সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘করোনা মোকাবেলায় এত দুর্নীতি অন্য কোন দেশে হয়নি’। এ ধরনের হঠকারী বক্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি কোন্ ধরনের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ ধরনের বক্তব্য দিলেন, কয়টি দেশে জরিপ করেছেন সেটি খোলাসা করা উচিত ছিল। যখন কেউ দায়িত্বশীল পদে থাকেন তখন তার তথ্য-প্রমাণসহ বক্তব্য পেশ করা উচিত। নচেত এটি সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করে। আমাদের দেশে করোনাকালে যদি ইতিবাচক ভূমিকা সরকার পালন না করত, তবে অনেক আগেই দুর্ভিক্ষ হতো। কিন্তু দীর্ঘ করোনার আঘাত যা এখনও বহমান, আমফান, পাশাপাশি এক কোটি বানভাসি লোক সবকিছুর দেখভাল, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সরকার যথাসাধ্য করছে। এখন দেখতে হবে আমাদের আচার আচরণ, কর্মনিষ্ঠায় জবাবদিহি এবং সঠিক সময়ে সঠিক লোকের কাছে প্রাপ্য অর্থ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা। অর্পিত দায়িত্ব যদি আমরা সঠিকভাবে পালন না করি, তবে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও সামাজিক অন্যায় হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। ঢালাওভাবে অন্যায্য মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা দরকার। কোন কোন প্রতিষ্ঠান করোনাকালে কর্মীবাহিনী ছাঁটাই করেছে, এটি অন্যায়। এবার করোনাকালেও বানভাসিদের পাশে বিএনপি-জামায়াত এমনকি জাতীয় পার্টির তেমন উল্লেখযোগ্য সাহায্য-সহযোগিতা চোখে পড়েনি। সমস্ত দায় বুঝি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। তাই বুঝি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলেছে। তবে সমাজে যেমন নানা চরিত্রের লোক থাকে, তেমনি মুষ্টিমেয় বিপথগামীও থাকতে পারে। আশার কথা, সরকারপ্রধান এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়ন হচ্ছে।
ঢাকার বাইরে চাকরি করতে গিয়ে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। এটি কোন ধরনের স্যাবটাজ কিনা একমাত্র গোয়েন্দা সংস্থাই বলতে পারবে। নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে এক শ্রেণীর পরশ্রীকাতর করোনাকালে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাকালে মানুষের মধ্যে যেখানে মৃত্যুভীতি বেশি করে সঞ্চারিত হওয়ার কথা, সেখানে একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে লোভ-লালসা, নারী ও শিশুর প্রতি নির্যাতন-একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বড় লজ্জা দেয়। যারা এ ধরনের অপরাধ করে, অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। আবার অপরের সম্পত্তি ভোগ দখল করার জন্য সমাজের একটি শ্রেণী উঠেপড়ে লেগেছে। ঘটনাটি অনেকে মনে করিয়ে দেয় প্রায় এক যুগের অধিককাল আগে আর্মেনিয়ায় ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের ঘটনার পর পরই দূরবস্থার কথা। একদল মানুষ যখন ভূমিকম্পে আক্রান্ত আর্মেনিয়ায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছিল, তখন আরেক দল ব্যস্ত ছিল লুটপাটে।
সায়মা ওয়াজেদ হোসেন ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে যথার্থ অর্থেই জাতির পিতার জীবন পর্যালোচনা করে আমাদের তরুণ সম্প্রদায়ের নৈতিকতা, সততার দীক্ষা নিতে বলেছেন। আসলে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তবে দেখব যে, দুর্যোগে ভেঙ্গে না পড়ে অসীম সাহসিকতায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, বাঙালী জাতিকে সুগভীর মমতায় একতাবদ্ধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই নৈতিকতা বলে বলীয়ান হয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট আছেন। তবে মানসিক প্রশান্তি দরকার সবার। মনোবিজ্ঞানীদের মানসিক প্রশান্তির জন্য কাজে লাগানো উচিত।
করোনাকালে মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রশান্তির ওপর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন। অজানা আশঙ্কায় মানুষের মধ্যে একদিকে আগ্রাসী ভাব বেড়ে উঠেছে বলে প্রতীয়মান হয়। দুশ্চিন্তায় অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যে অবসাদের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক ট্যাবু দূর করে মানসিক প্রশান্তির জন্য যখন টিভি সংবাদপত্র এবং অনলাইনে করোনায় আক্রান্তদের হিসাব প্রতিদিন না দেখানোর ব্যবস্থা করা দরকার। আলাপকালে কেউ কেউ বলেছেন, করোনায় কিছুই হবে না, তাই তো মাস্ক পরিধান করি না। সরকার অবশ্য আইন করেছে মাস্ক পরার জন্য। কিন্তু মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তির জন্য ভাল ও প্রশান্তিময় সংবাদ, গান, কৌতুক ও শিক্ষণীয় সমাজ সচেতনতামূলক যেমন, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কিত কার্টুন, জীবনটিকা প্রচারের ব্যবস্থা করা দরকার। শিল্পী সমাজকে এ ব্যাপারে অধিকতর কাজে লাগানো উচিত। চাকরিচ্যুতি যাতে বেসরকারী খাতে না হয় সে জন্য অবশ্যই বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতা দিতে হবে। মানসিক বিকারগ্রস্তরা যাতে দ্রুত কাজে ফিরে আসতে পারে, দক্ষ কর্মীর হাতিয়ার হতে পারে সে জন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করতে হবে। যারা প্রান্তিক পর্যায়ে সমাজপতি তাদের অবশ্যই আচরণগত সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। বোঝাতে হবে এ সমস্যা কেটে যাবে- দুঃখের পরেই আবার সুখের আলো আসবে। যারা ধান্ধাবাজি করে বিশাল অর্থ বৈভবের মালিক হতে চাচ্ছে তাদের জন্য টলস্টয়ের অমর ছোট গল্প, ‘হাউ মাচ ল্যান্ড ডাজ এ ম্যান নিড?’ এ গল্পটি করোনাকালে বাংলায় রূপান্তর করে বিভিন্ন সম্প্রচার কেন্দ্র-বেতার ও টিভির সহায়তায় প্রচার করা উচিত। সরকার টেলিটকের মাধ্যমে সস্তায় ইন্টারনেটের ব্যবস্থা এবং ইন্টারনেটে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে পড়ার জন্য যে শিক্ষা ঋণ দিতে যাচ্ছে, তা ইতিবাচক এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কিছুটা হলেও প্রশান্তির।
লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট এবং আইটি এক্সপার্ট
pipulbd@gmail.com
আরকে//