ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

শহীদ মিনারে কাজী আরিফের মরদেহ

প্রকাশিত : ০১:২০ পিএম, ২ মে ২০১৭ মঙ্গলবার

সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কাজী আরিফের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়।

সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কাজী আরিফের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়।

শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আবৃত্তিশিল্পী কাজী আরিফের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়েছে। সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ দুপুর ১টা পর্যন্ত রাখা হবে।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাজী আরিফের মরদেহ নিয়ে আসার পর ঢাকা জেলার মেজিস্ট্রেট রবীন্দ্র চাকমা নেতৃত্বে পুলিশের একটি চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন ।

এর আগে কাজী আরিফের মরদেহবাহী বিমান আজ সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার হয়রত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে তাঁর মরদেহ গ্রহণ করে পরিবারের সদস্যরা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন কাজী আরিফ। আবৃত্তিচর্চাকে তিনি শিল্পে রূপ দিয়েছেন। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন সেটা আমরা ভাবতে পারিনি।’

এ সময় প্রয়াত আরিফকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়েছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, আবৃত্তিকার হাসান আরিফ, মুক্তিয়োদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু প্রমুখ। শিল্পাঙ্গনের মানুষ ছাড়াও কাজী আরিফকে শেষবারের মতো দেখতে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন রাজনৈতিককর্মী ও নেতারা। এ ছাড়া বিভিন্ন আবৃত্তি সংগঠনের সদস্যরাও সকাল থেকে অবস্থান করছেন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, ‘কাজী আরিফ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে সমষ্টিগত জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই আমাদের তাঁর কাজের মূল্যায়ন করতে হবে।’

আবৃত্তিকার হাসান আরিফ বলেন, ‘এই মৃত্যু করো কাম্য নয়। আবৃত্তিশিল্পে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়।’

সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর কাজী আরিফের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ধানমণ্ডিতে মেয়ে অনুসূয়ার বাসায়। সবশেষ উত্তরা চার নম্বর সেক্টরে মায়ের কবরে এই গুণী আবৃত্তিশিল্পীকে সমাহিত করা হবে৷

গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাজী আরিফ মারা যান। পরে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে বাদ মাগরিব তাঁর প্রথম জানাজা হয়।

কাজী আরিফ ১৯৫২ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষা ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে। পেশায় স্থপতি এই গুণী একাধারে আবৃত্তিশিল্পী, লেখক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।

১৯৭১ সালে ১ নম্বর সেক্টরে মেজর রফিকুল ইসলামের কমান্ডে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন উদ্যোক্তাদের একজন তিনি। সারা দেশ ঘুরে আবৃত্তির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সংগঠনগুলোতে। প্রজ্ঞা লাবণী-কাজী আরিফ বাংলাদেশের প্রথম জনপ্রিয় হওয়া আবৃত্তি জুটি।