ছাত্রীর কাছে যৌতুক দাবী, শিক্ষকের নামে পরোয়ানা
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:৪৯ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ রবিবার
শিক্ষক আল-আমিন মাঝি
ছাত্রীকে বিয়ে করে যৌতুক দাবির মামলায় ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মো. আল-আমিন মাঝির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএম ইমরানুর রহমান রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ আদেশ দেন।
ইতোপূর্বে সরকারি মহিলা কলেজে অধ্যায়নকালে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দৈহিক মেলামেশা করেও বিয়ে করতে অস্বীকার করলে চাপের মুখে সে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়।
ওই ছাত্রীর মা ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর খান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদ হাসানের কাছে অভিযোগ করেন এবং মামলা দায়েরের জন্য ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে এফিডেভিট সাবমিট করেন। তবে ওই সময় জেলা ও দায়রা জজ ছুটিতে থাকায় মামলা হয়নি। পরে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত আল-অমিন মাঝি নলছিটি উপজেলার রানাপাশা গ্রামের মো. তৈয়বুর রহমান মাঝির ছেলে। তিনি ৪ বছর আগে ঝালকাঠি মহিলা কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, নির্যাতিত ওই ছাত্রী ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ২০১৮ সালে এইচএসসি পাস করে। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কয়েক মাস আগে ক্লাস নেয়ার সুবাদে শিক্ষক আল-আমিন মাঝি ওই ছাত্রীর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করেন। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে শিক্ষক আল-আমিন ওই ছাত্রীকে ফোন করে মহিলা কলেজে এনে বলেন, ‘তুমি ভালো রেজাল্ট করেছো। তুমি মেডিকেলে ভর্তির পরীক্ষা দাও। আমি তোমাকে সব রকমের সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ রয়েছে, সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে প্রভাষক আল-আমিন বিভিন্ন সময় ছাত্রীকে বরিশাল-ঝালকাঠির বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় ও মহিলা কলেজ সড়কের বাসায় নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে প্রভাসক আল-আমিন তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও ওই ছাত্রীর পরিবার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিলে সে বাধ্য হয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই ওই ছাত্রীকে যৌতুকের টাকার জন্য তিনি নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে শুরু করে। টাকা না দিলে বাবার বাড়ি থেকে আর নেয়া হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন প্রভাষক আল আমিন মাঝি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রভাষক আল-আমিন মাঝির বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে শিক্ষাগত সহযোগীতা, পরীক্ষায় সুযোগ-সুবিধা দেয়াসহ একই কায়দায় যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত আল আমিন মাঝি ছাড়াও ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের আরও কয়েকজন চিহ্নিত শিক্ষকের একটি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক দৈহিক সম্পর্ক ও যৌনাচারের অভিযোগ রয়েছে।
এনএস/