ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

পূর্বাচলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২৭ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ বুধবার

সবুজে ঘেরা পূর্বাচলে স্বস্তি নেই। প্রতিরাতেই আছে চোরের উপদ্রব, ঘটছে ডাকাতির ঘটনা। আছে খুনখারাবিও। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি কম বলেই এমন অবস্থা, অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। 

গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি অধিগ্রহণের আগে সাড়ে ছয় হাজার একরে বসবাস করতো প্রায় ১৪ হাজার আদিবাসী পরিবার। রাস্তাঘাট সরু থাকলেও এমন দুর্গম জঙ্গল তখন হয়তো ছিল না। এখন ঝোপ ঝাড়ের আড়ালে মাঝেমধ্যেই বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এলাকাবাসীরা জানান, জমির মালিকরা বাউন্ডারি তুলে রেখেছে, সেইসব বাউন্ডারির মধ্যেই মাঝে মাঝে লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় পুলিশের ভয়ে প্লটের কাছে আর আসে না মালিকরা। এতো দিনে এখানে বাড়িঘর হয়ে যেত কিন্তু সন্ত্রাসের কারণেই তা হচ্ছে না।

স্থানীয় একজন জানান, এখন এখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেই মানুষ বাড়িঘর তৈরির কাজ এবং বসবাস শুরু করতে পারে। বরাদ্দকৃত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হয়ে গেলে মানুষের কাজের ব্যবস্থা হবে এবং পূর্বাচল প্রজেক্ট রানিং হয়ে যাবে।

গরু চুরি কিংবা ডাকাতি হয়নি এমন বাড়ি নেই পূর্বাচলে। পুলিশি তৎপরতা নেই, তাই পূর্বাচল দুটি সেক্টরে গড়ে উঠেছে ডাকাতদের আস্তানা। এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, প্রতিরাতেই চুর-ডাকাতি হতে থাকে। সারারাত পাহাড়া দিয়ে গরু-বাছুর রাখতে হয়। ডাকাতদের ভয়ে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে চলে গেছে। এমনও পরিস্থিতি হচ্ছে যে, এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে ধরে তখন নিজের গরু নিজেকেই ট্রাকে উঠিয়ে দিতে হয়। কখনও যদি না নিতে পারে তখন মানুষ মেরে হলেও নিয়ে যাবে।

সন্ধ্যার পর পূর্বাচলে নিরাপদ নয় কেউই। বেড়াতে যাওয়া মানুষ অন্ধকার নামার আগেই ফিরে আসেন। 

ভুক্তভোগীরা জানান, ডাক্তাদের আতঙ্ক তো আছেই, মানুষ জিম্মি করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে মুক্তি দেয়। বড় বড় চালানের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে এটি। সন্ধ্যার পর শুরু হয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম।

আগন্তুকরা জানান, বিদ্যুতের ল্যান্ডপোস্টগুলো যদি চালু হলেও হয়তো কিছুটা পরিবেশ থাকতো। যেহেতু লোকজন আসে তাই পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।

৪টি থানার পাশাপাশি একাধিক পুলিশ ফাঁড়ি হবে প্রকল্প এলাকায়। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার লক্ষ্যণ আপাতত নেই।

রাজউক পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক বলেন, এখানে নিরাপত্তা বিষয়টা খুব জরুরি। চারটি থানা না হলেও চারটা ফাঁড়ি করে দ্রুত এর কার্যক্রম যাতে শুরু করা যায় তা নিয়ে কথাবার্তা চলছে। আমরা এই শহরটা নির্মাণ করার পরে যে লোকাল বডির কাছে হ্যান্ডওভার করবো সেজন্য ডেসার মতো একটি কোম্পানি গঠন করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এটি করা গেলে মানুষ তড়িৎগতিতে সার্ভিস পাবে।

পূর্বাচলে বেড়াতে আসা বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছে এই এলাকাটি ক্রমেই হয়ে উঠছে ভয়ঙ্কর থেকে আরও ভয়ঙ্কর। সন্ধ্যা নামলেই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের পাশাপাশি অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে ঘটেছে অনেকগুলো হত্যার ঘটনাও। যে কারণে স্থানীয়দের পাশাপাশি বেড়াতে মানুষের দাবি হয় এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক , নয়তো অভিলম্বে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক যেন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করে।

এএইচ/এমবি