করোনার মধ্যেও মোংলা বন্দরে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৫:১৯ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ বুধবার
চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবক্ষেত্রে নেমে আসে স্থবিরতা। সারাদেশে লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নামলেও ব্যতিক্রম ছিল মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এই বন্দর দিয়ে জাহাজ আগমনের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও মে ও জুন মাসে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব আয় বেড়ে যায়। বন্দর ব্যবস্থাপনা ও সঠিক নির্দেশনা সবাই মেনে চলায় এ সাফল্য বলে মনে করেন বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোন অবস্থায় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখিনি এবং বিদেশী যারা এসেছিলেন তাদেরকে যথাযথভাবে সাহায্য করেছি। এছাড়া জাহাজ যেগুলো এসেছে, প্রতিটি জাহাজকে কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশনা মেনে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
বন্দরের শীর্ষ এ পদস্থ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব ও জিওবির আন্ডারে প্রজেক্ট আছে। প্রত্যেকটি প্রজেক্ট প্লান মাফিক চলছে।’
মোংলা বন্দরের ট্রাফিক পরিচালক মো. মোস্তফা কামাল জানান, ‘করোনা পরিস্থিতিতে জাহাজ আগমন ও নির্গমনের কার্যক্রমে কোন ভাটা পড়েনি। এ বন্দরে গত অর্থ বছরে ৯০৩টি জাহাজ আসে এবং এক লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে।’
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বন্দরে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রমে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অর্থ ও হিসাবরক্ষণ বিভাগ থেকে জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে গত মে মাসে মোংলা বন্দরে বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ এসেছে ৫৯টি এবং রাজস্ব আয় হয়েছে ২০ কোটি ২৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা। জুন মাসে ৫২টি থেকে রাজস্ব ১৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, জুলাইয়ে ৬৪টি থেকে ২৩ কোটি ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং আগস্টে ৭০টি থেকে ২৪ কোটি ৫২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।
এদিকে বন্দরের এ অর্থ বিভাগ জানায়, গত এক দশকে এ বন্দর দিয়ে দেশি-বিদেশী জাহাজ আসা ও যাওয়ার সংখ্যা বেড়েছে পাঁচগুণ। সবক্ষেত্রে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩২০ কোটি টাকা।
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স নুরু এণ্ড সন্স মালিক এইচ এম দুলাল বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে পণ্য বোঝাই ও খালাসে তাদের কোন বেগ পেতে হয়নি। সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে যখন বরোনার প্রভাবে ভাটা দেখা দিয়েছে, তখন মোংলা বন্দর পণ্য ওঠা-নামা স্বাভাবিক রেখে লক্ষমাত্রার রাজস্ব আয় করেছে।’
বন্দরের আরেক ব্যবসায়ী মশিউর রহমান জানান, ‘করোনাকালীন সময়ে ভিন্ন চিত্র ছিল মোংলা বন্দরে। এ বন্দর দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য ছাড় করাতে পারায় বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েক লাখ মানুষ তাদের উপার্জন স্বাভাবিক রাখতে পেরেছেন।’
এআই//আরকে//