‘লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা পরীক্ষা দ্রুত সংক্রমণ বিস্তারে সহায়ক’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৬ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৫৯ পিএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা কিছুটা কমলেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আক্রান্তের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিভাগকে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, আক্রান্ত ও মৃতের হার টেনে ধরতে সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ নির্ণয়সহ স্বাস্থ্য তথ্য প্রবাহের গুণগত মান বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
বিশ্ব ব্যাংকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা বিষয়ক কর্মকর্তা ডা. জিয়াউদ্দিন হায়দার এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু সংখ্যাটা নির্ধারণ করা হয় মোট কতজন আরটি পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে পজিটিভ হিসাবে শনাক্ত হয়েছিলেন, আর তার মধ্যে কতজন মারা গিয়েছেন সেটার ভিত্তিতে। এর অর্থ হলো যারা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু কোনো টেস্ট করার পূর্বেই মারা গিয়েছেন তারা সরকারিভাবে প্রকাশিত মোট মৃতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন না।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কোনো ঘরে কোভিড-১৯ এর লক্ষণসহ কোনো ব্যক্তির সন্ধান পেলে সরকারি সংস্থার লোকজন এসে স্যাম্পল নিয়ে যায় এবং টেস্টের ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত বাড়িঘর লকডাউন করে দিয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের চেহারা ভিন্ন। এখানে আক্রান্ত মানুষকে টেস্ট করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়, টাকার বিনিময়ে স্যাম্পল দিতে হয়, আর রেজাল্টের জন্য তিন-চার দিন অপেক্ষা করতে হয়।’
ডা. জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘সবচেয়ে ভয়ানক হলো কোভিড পজেটিভ-নেগেটিভ সবাইকে এক লাইনেই দাঁড়াতে হয়, যা কোভিড-১৯ এর দ্রুত সংক্রমণের জন্য খুবই সহায়ক।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা স্পষ্ট যে সরকারিভাবে প্রাপ্ত মৃত্যুর সংখ্যাটা ভুল এবং বিভ্রান্তিকর। কোভিড নিয়ন্ত্রণে বা মৃত্যুর তালিকা ছোট করতে এই সংখ্যাটা কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। এই অচল অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এখনই ব্যবস্থা নিতে দেশের প্রতিটা আনাচে-কানাচে প্রতিদিন যত মানুষ মারা যাচ্ছে ইউনিয়ন এবং মিউনিসিপালিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে তাদের তথ্য জরুরি ভিত্তিতে সংগ্রহ করতে হবে।’
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, অনেক দেশ ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে এবং হচ্ছে। যেখানে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, সেসব দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। দেশগুলোর সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে করোনা মহামারি আরো খারাপ থেকে খারাপতর হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেডরস অ্যাডহানম ঘেবরেয়াসাস মনে করেন, নেতাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের খামখেয়ালি বার্তা দেওয়ার কারণে জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে। সে কারণে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
টিআই/এসি