প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল দাবি বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের
বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৪:৫৩ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ শনিবার
২০০১ সালের ৮ জুলাই এক আইন পাসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি)। পরবর্তীতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ২০১০ সালের ২০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-এর আইন বাস্তবায়নের জন্য সরকার এসআরও জারি করে।
অবশেষে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর এবং পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরুর পর ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও শিক্ষার্থীদের কপালে জোটেনি প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল একাউন্ট। যার ফলে ই-লার্নিং, শিক্ষাবৃত্তি ও বিশেষ করে গবেষণার কাজে নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু শিক্ষার্থী তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-মেইল একাউন্ট দেওয়ার জন্য নোটিশ দিচ্ছে, আমাদের কি হবে, আমরাই বা পিছিয়ে থাকবো কেন?’
সারাবিশ্বের স্বনামধন্য জার্নাল হতে অনলাইনে গবেষণা প্রবন্ধ পড়া, গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশনা, গবেষণা অনুদান প্রাপ্তি ও শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদনসহ নানা কাজে প্রয়োজন হয় প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইলের। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আদৌ বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসনের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। ফলশ্রুতিতে গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা পড়ছেন নানা জটিলতায়। অনেকে আগ্রহ হারাচ্ছেন নানামুখী গবেষণায়।
মহামারির এই দুঃসময়ে বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল না থাকার কারণে আন্তর্জাতিক অনলাইন প্লাটফর্মগুলো থেকে একাডেমিক, ব্যবহারিক এবং ক্যারিয়ার বিষয়ক অনেক দক্ষতা অর্জন থেকে পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়াও আনলিমিটেড গুগল ড্রাইভ ব্যবহার, বিভিন্ন লার্নিং এণ্ড ডেভেলপমেন্ট সফটওয়্যারের ফ্রি এক্সেসসহ আরও অনেক সুবিধা গ্রহণে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। স্নাতক শেষে দেশের বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করতে গিয়েও বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছে অনেকে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুবল কান্তি দে বলেন, "প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল আইডির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গবেষণা, স্কলারশিপ, রিসার্চ পেপার পাবলিশ, সহজে ফান্ডিংসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পায়, ছাত্ররা দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করে, সেখানে এই প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল আইডেন্টিটির মতো কাজ করে। আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল দেওয়ার ব্যবস্থা চালু আছে। আমরা চাই বশেমুরবিপ্রবি প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের প্রধান প্রোগ্রামার বিএম আরিফুল ইসলামের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, "বিদেশে উচ্চশিক্ষা, গবেষণার জন্য যারা আগ্রহী ছিলো এর আগে তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বল্পসংখ্যক প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান করা হয়েছিলো। করোনাকালীন সময়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কোর্স ও অন্যান্য প্রোগ্রাম সমূহে অংশগ্রহণ করার জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে এর চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্যোগ নিলে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান করা সম্ভব, সে সক্ষমতা আমাদের রয়েছে।"
প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদানের বিষয়ে মুঠোফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.কিউ.এম. মাহবুব-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে সকল শিক্ষার্থীদের জন্যই প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। দেশ-বিদেশে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় নিশ্চিতে ও আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য খুব দ্রুতই এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।"
এনএস/