রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের স্মারকলিপি প্রদান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩৫ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ রবিবার
রি-রোলিং ও স্টিল মিলগুলোতে শ্রমিকদের নিয়োগপত্র পরিচয়পত্র প্রদানসহ শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবিতে রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের পক্ষ থেকে আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মিছিল সহযোগে বিজয় নগরে অবস্থিত কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকের নিকট স্মারকলিপি দেয়া হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমাম হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি জামাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রি-রোলিং ও স্টিল মিলের শ্রমিকরা প্রচন্ড উত্তাপে ও ঝুঁকির মধ্যে কষ্টকর পরিশ্রমের মাধ্যমে রড উৎপাদন করে। শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করতে হয়। একটু এদিক ওদিক হলেই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারাত্মক আহত ও কখনো কখনো মৃত্যু পর্যন্ত হয়। অথচ এই শ্রমিকদের চাকরির ন্যূনতম সুরক্ষা নেই। কারখানাগুলোতে চলে বেআইনিভাবে শ্রমিকের চাকরিচ্যূতি। যখন তখন বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু রি-রোলিং ও স্টিল মিলগুলোতে নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র না থাকায় শ্রমিকরা কোন আইনের আশ্রয় নিতে পারে না। এমনকি কর্মক্ষেত্রে আহত বা নিহত হলেও প্রাপ্য চিকিৎসা সহায়তা কিংবা ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এই কারখানাগুলোতে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা বলতে কিছু নেই। শ্রম আইন ২০০৬ (অদ্যবধি সংশোধিত) এর দ্বিতীয় অধ্যায়ে নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলির উল্লেখ আছে। কিন্তু এ আইন মনে হয় রি-রোলিং মিলের শ্রমিকদের জন্য যেন প্রযোজ্য নয়! শ্রম আইনের ৫ ধারায় বলা আছেÑকোন মালিক নিয়োগপত্র প্রদান না করিয়া কোন শ্রমিককে নিয়োগ করিতে পারিবেন না এবং নিয়োজিত প্রত্যেক শ্রমিককে ছবিসহ পরিচয়পত্র প্রদান করিতে হইবে। রি-রোলিং ও স্টিল মিল কারখানা বলে স্বীকৃত হলেও তার শ্রমিকরা মালিকের কাছে সেই স্বীকৃতি পায় না। একজন শ্রমিকের একমাত্র স্বীকৃতি হলো তার নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র। শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়ন করার আইনি বিধান থাকলেও নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র না থাকায় ইউনিয়ন করাও শ্রমিকদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
রি-রোলিং ও স্টিল মিলে কয়েক লক্ষ শ্রমিক আমাদের দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরও এদের দুর্দশা দেখার যেন কেউ নেই। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (অদ্যবধি সংশোধিত) এর ৩১৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রি-রোলিং ও স্টিল মিলের শোষিত-বঞ্চিত-নির্যাতিত শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে প্রধান দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। তাই রি-রোলিং ও স্টিল মিল মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও অতি মুনাফার লোভের চাকায় পৃষ্ঠ শ্রমিকদের পাহাড়সম সংকট নিরসনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরকে//