তিস্তা-গঙ্গাচড়ার ভাঙ্গনে দিশেহারা মানুষ (ভিডিও)
রংপুর ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৩৭ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে প্রায় এক হাজার বাড়িঘর, আবাদী জমি, স্কুল নদীতে বিলীন হয়েছে। এদিকে, তিস্তার ভয়াল থাবায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধা জেলার সীমানাও।
তিস্তা নদীর পানি বেড়ে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিস্তা গতিপথ পরিবর্তন করে ঘনবসতি এলাকা ঘিরে ফেলেছে। অন্যদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়ার তিনটি গ্রাম, বাজারের অর্ধেক এলাকাসহ একটি বেসরকারী স্কুল, ঈদগাহ মাঠসহ প্রায় এক হাজার বাড়িঘর ও আবাদী জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে তিস্তা সড়ক সেতুসহ রংপুর-লালমনিরহাট সড়ক হুমকির মুখে।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, একটি ভেড়িবাঁধ দিলে অত্র এলাকার ৪টি ইউনিয়নের লোক বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোক এসে দু’চারটি বস্তা ফেলে চলে যায়।
লক্ষ্মিটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়সারা কাজ করলে পুরো এলাকাকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না।
গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মিটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী বলেন, আর যদি এই ভেড়িবাঁধ দেওয়া না হয়, এরকম ছোট ছোট প্রকল্প করে কাজ করলে কোন লাভ হবে না।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ভাঙ্গন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন বড় প্রকল্প গ্রহণ।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, স্থায়ী ব্যবস্থার দিকেই এগুচ্ছি এবং কারিগরি কমিটি গঠনের একটা প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি।
তিস্তার তীব্র ভাঙনে ২ সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রামের উলিপুরের চরবজরা ও গাইবান্ধার লখিয়ার পাড়া এলাকার তিন শতাধিক পরিবার এখন ভিটেহারা। বিলীন হয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদসহ চিলমারী-উলিপুর বজরা মহাসড়কের প্রায় ২শ’ মিটার সড়কপথও।
অত্র এলাকার মানুষ জানান, আবাদী জমি শেষ, এখন মাত্র ২৫ শতাংশ জমি আছে। অন্য আরেকজন বলেন, বাড়ির জমি ভেঙে যাওয়ার কারণে ঘর সরিয়ে নিয়েছি কিন্তু কোথাও যে তুলবো সেই জমিটুকুও নেই। ইতিমধ্যে ২-৩শ’ বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে, এ রকম চলতে থাকলে আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরো গ্রামটিই বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে, বরাদ্দ না পাওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দ পেলে এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া যাবে। তখন কাজের গতিটা আরও ত্বরান্বিত হবে।
তিস্তা নদীর ভাঙ্গন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
এএইচ/এমবি