ভুতূড়ে বিলে নাকাল রাজধানীবাসী (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:১৮ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার
রাজধানীতে কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি বিদ্যুতের ভুতূড়ে বিল। ফলে অনাকাঙ্খিত বিল গুণতে গুণতে নাকাল ঢাকার মানুষ। তবে প্রতিমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, বিভিন্ন অফিসকে সতর্ক করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
আদাবর-মনসুরাবাদ হাউজিংয়ের মর্জিনা বেগম। এ ফ্ল্যাটে তিনি একাই থাকেন। কিন্তু গত জুন মাসে বিদ্যুতের বিল আসে ৩২ হাজার ২৯৯ টাকা।
ভুক্তভোগী এই নারী বলেন, ‘এতোটাকা বিল কিভাবে আসলো চিন্তাও করতে পারি না। বাসায় আমি একাই থাকি, তারপরও এমন অস্বাভাবিক বিলে হতবম্ব হয়েছি। বিদ্যুৎ অফিসে বাসার ম্যানেজারকে পাঠিয়েছিলাম, তারা বলছে ঠিক করে দিবে। অভিযোগের পর আগস্টের বিল কমেছে। কিন্তু তার অংক ২৭ হাজার।’
তিনি বলেন, ‘আগে আসতো দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু পরের মাসেই ২৭ হাজার টাকা।’
তবে মর্জিনা খাতুন একাই যে এমন অনাকাঙ্খিত বিল গুণছেন তা কিন্তু নয়। রাজধানীজুড়েই ভুতুরে বিল নিয়ে বিস্তর অভিযোগ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের।
ভুক্তভোগী আরেক নারী বলেন, ‘নিয়ন্ত্রিত আয়ে আমাদের চলতে হয়, সেখানে বিদ্যুৎ বিলেই যদি সব দিতে হয়, তাহলে বাকি কাজগুলো কি করে চলবে। মাসের পর মাস শুধু বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু কোন কারণ ও প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছি না।’
ভুতূড়ে বিলের খপ্পরে পড়া আরও কয়েকজন জানান, ‘দুটো ফ্যান, একটা ফ্রিজ ও টেলিভিশন চলে, যার বিল আসছে আড়াই হাজারের বেশি টাকা। যদিও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি তদন্ত করার কথা বলেছেন। কিন্তু তারপরও এটার কোন সুরাহা হচ্ছে বলে মনে হয় না।’
আক্ষেপ প্রকাশ করে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, ‘সরকার মানুষের জন্য অনেক কিছু করছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিলে নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণি তো পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনভাবেই সামঞ্জ্য হচ্ছে না। আগে যেখানে দুই হাজার টাকা বিল আসতো, এখন তা আট হাজার হয়েছে।’
বিপাকে পড়েছেন বিদ্যুৎকার্ড ব্যবহারকারীরাও। এক হাজার টাকা ঢুকালে দেখা যাচ্ছে এক সপ্তাহ থাকে না। কিভাবে এটা হচ্ছে তা বলতে পারছি না। অনেক জায়গায় অভিযোগ দিলেও কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না বলেও জানান আরেক ভুক্তভোগী।
গ্রাহকরা বলছেন, ‘করোনার আগে যেখানে বিল আসতো দুই হাজার, সেখানে বিদ্যুদের ব্যবহার না বাড়লেও দ্বিগুণ বিল গুণতে হচ্ছে। বিদ্যুতের দামও বাড়েনি তাহলে সমস্যাটা কোথায়? মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন এই ভুতূড়ে বিল সমস্যা নিরসন করা হবে। আমরাও অনতিবলম্বে চাই এই ধরনের বিল যেন না দেয়া হয়।’
এমন বিস্তর অভিযোগের ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘খুবই অনাকাঙ্খিত একটি বিষয় ঘটেছে। যারা গ্রাহক, তাদের বিষয়টাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবহিত হয়েছি, খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এআই/এমবি