ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

টেন্ডার ছাড়াই রাজশাহী বোটানিক্যালের ২০০ গাছ সাবাড়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৫১ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ শনিবার

রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় প্রায় ২০০ গাছ কাটছে কর্তৃপক্ষ। টেন্ডার ছাড়াই গাছগুলো কাটছেন রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া এলাকার রবিন নামের এক ব্যবসায়ী। গত তিনদিন ধরে ১০ জন শ্রমিক গাছ কাটা ও পরিবহনের কাজ করছে। 

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা পরিচালনা করে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাসিকের কর্মকর্তারা ৮ লাখ টাকায় গাছগুলো বিক্রি করেছেন। টেন্ডার ছাড়াই পানির দরে বিক্রি করা হয়েছে এসব গাছ। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭২ সালে রাজশাহী শহরের পদ্মা পাড়ের শ্রীরামপুর এলাকার ৩৩ একর জমির উপর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। এএইচএম কামারুজ্জামান মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি এটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর উদ্যানে মূল্যবান গাছের চারা রোপণ, ফুল গাছের কোয়ারি ও কুঞ্জ তৈরি, লেক ও পুকুর খনন, কৃত্রিম পাহাড় তৈরি করা হয়। ১৯৭৫-৭৬ সালের দিকে তৎকালীন জেলা প্রশাসক শফিউর রহমান ও নজরুল ইসলামের সময়ে কিছু দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষরোপণ করা হয় এখানে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটির নামকরণ করা হয় শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা। 

সাম্প্রতিককালে উদ্যানের বেশকিছু গাছ কাটা পড়েছে নভোথিয়েটার নির্মাণের জায়গা করে দিতে। এখন আবার বোটানিক্যাল গার্ডেনের উন্নয়নমূলক কাজের নামে প্রায় ২০০ গাছ কাটা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে-চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা টেন্ডার ছাড়াও ৮ লাখ টাকায় গাছগুলো বিক্রি করেছেন। রবিন নামের এক ব্যক্তি গাছ কিনে নিয়েছেন।

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা পরিচালনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘পার্কের ভেতর কিছু ঢোকাতে কিংবা বের করতে হলে আমাকে জানাতে হবে। কিন্তু গাছ কাটার বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

চিড়িয়াখানার উদ্ভিদতত্ববিদ শেখ হেলেনা খাতুন বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেনে সব বিরল প্রজাতির গাছ থাকতে হয়। এত সাধারণ গাছ থাকার তো দরকার নেই। সেজন্য গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তবে টেন্ডার হয়েছে কি না তা রাসিকের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন।

চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও রাসিক মেয়রের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী আলমগীর কবির বলেন, গাছের ডালপালা ও ছোট কিছু গাছ কাটার জন্য বলা হয়েছে। এ কারণে টেন্ডার দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রায় ১০০ প্রজাতির বিরল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য অপরিকল্পিতভাবে লাগানো ছোট কিছু গাছ কাটা হচ্ছে। গাছ কাটার জন্য বন বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।
কেআই//