এমসি কলেজে ধর্ষণ মামলার ২ আসামী রিমান্ডে (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার
সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ঘটনার প্রধান আসামী সাইফুর ও অর্জুনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য আদালতে তাদের দুই জনকে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানী শেষে সাইফুর ও অর্জুনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এসময় আসামি সাইফুর ও অর্জুনের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তবে আসামিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করে।
ধর্ষণ মামলায় তাদের রিমান্ডের পাশাপাশি অস্ত্র মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানান আইনজীবিরা।
এদিকে, এ ঘটনায় গতরাতে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে আরেক আসামী রাজনকে গ্রেফতার করা হয়। বিকেলে রাজন-সহ বাকি ২ আসামী রনি ও রবিউলকে আদালতে তোলা হবে।
এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে রাজনের সহযোগী আয়নালকে।
উল্লেখ্য, সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণী (২০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। গত শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ধর্ষণকারী সবাই ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে। ওই তরুণী তার স্বামীকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার তরুণীর বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। তিনি শুক্রবার বিকেলে স্বামীসহ নিজেদের গাড়িতে করে শহরের টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজে বেড়াতে যান। গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার স্বামী। সন্ধ্যার পর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গাড়ি রেখে তারা একটি দোকানে কেনাকাটা করেন। পরে গাড়িতে ফিরে তারা গল্প করছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কয়েকজন যুবক তাদের গাড়ির কাছে আসে। তারা তরুণীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে স্বামী বাধা দেন। তখন তাকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে তারা জোরপূর্বক গাড়িতে উঠে স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে পাশের বালুচর এলাকায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের অভ্যন্তরে নিয়ে আসে। সেখানে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের সামনে গিয়ে স্বামীকে গাড়ি থেকে বের করে আটকে রাখে এবং স্ত্রীকে গাড়িতে ধর্ষণ করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর স্বামীকে ছেড়ে দিলে তিনি ৭ নম্বর ব্লকের সামনে স্ত্রীকে বিধ্বস্ত অবস্থায় পান।
এ সময় তিনি টিলাগড়ের এক নেতাকে মোবাইল ফোনে ঘটনার কথা জানান। যিনি একসময় জেলা ছাত্রলীগের পদধারী নেতা ছিলেন। ওই নেতা টিলাগড়ের আরেকটি বলয়ের প্রভাবশালী নেতা। তিনি আসার পর ধর্ষণকারীরা চলে যায়।
এ সময় ধর্ষণকারীদের বলয়ের নেতারা ঘটনা চাপা দিতে আপসরফার চেষ্টা চালান। দীর্ঘসময় চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি ভয়ভীতিও প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু ধর্ষিতার স্বামী এবং ওই নেতা বিষয়টি মানেননি।
পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ ধর্ষণের শিকার তরুণীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠায়। এ সময় ধর্ষকদের ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল জব্দ এবং ওই দম্পতির ব্যবহৃত প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়।
এসএ/