সিংড়া ও নলডাঙ্গায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৩৫ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ বুধবার
নাটোরের সিংড়া ও নলডাঙ্গায় দ্বিতীয় দফা বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিংড়া পৌর এলাকার ১২টি ওয়ার্ডে বন্যার পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। উপজেলা পরিষদ, থানা, সাব রেজিষ্টার, ভূমি অফিস, সিংড়া বাজার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পোস্ট অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে জলমগ্ন হয়েছে।
সিংড়া শহর এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন। উপজেলায় ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পৌরসভার ৯ টি আশ্রয় কেন্দ্রে ইতিমধ্যে ৬ শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
বুধবার সকালে পানির চাপে ভেঙ্গে গেছে উপজেলার সিংড়া- বলিয়াবাড়ি সড়কের একাংশ। শোলাকুড়া মহল্লায় মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা ধসে গিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির নির্দেশে স্থানীয় জনসাধারনকে সাথে নিয়ে প্রতিনিধিরা রাস্তাটি রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। তবে প্রয়োজনীয় বালুর বস্তা সরবরাহ পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগও রয়েছে তাদের। স্থানীয়দের অভিযোগ ,অবৈধ সৌঁতিজাল এবং নদীর শাখা প্রশাখায় বাঁধ নির্মাণের ফলে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য তারা পরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
উপজেলা কৃষি ও মৎস্য অফিস জানিয়েছে , দ্বিতীয় দফা বন্যায় ২৫’শ হেক্টর রোপা আমন, ৭ হেক্টর জমির সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ভেসে গেছে ১৩’শ পুকুর। নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়, জেলার নদনদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নাটোর পানি উন্নয়ন বোডর্রে নির্বাহী প্রকৌশলী আল আসাদ জানান, আত্রাই নদীর পানি সিংড়া পয়েন্টে বিপদসীর ১০৫ সেনইটমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো: জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, বন্যার কারণে পৌর এলাকার মানুষ পানিবন্দি। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। বিভিন্ন স্থানে নিজ অর্থায়নে বালির বস্তা সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, উপকূলীয় এলাকার মত চলনবিলের মানুষেরাও বন্যা কবলিত। এ এলাকার মানুষদের অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপজেলার সকল সৌঁতি জাল উচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন কাজ করছে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে ও বন্যা কবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরন করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যাকবলিত হয়েছে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলা। বন্যাকবলিত মানুষদের আ¤্রয়ের জন্য সিংড়া ও নলডাঙ্গা উপজেলা এবং সিংড়া পৌর এলাকায় ৩৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতিমদ্যে ১৭শ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। সিংড়া উপজেলার বর্ন্যাতদের সহায়তার জন্য নগদ ১ লাখ টাকা ও ২৫ মেট্রিক টন চাল এবং নলডাঙ্গার জন্য ৩০ হাজার টাকা ও ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আরকে//