ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

নৌঘাট সংকটে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লী (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৪ পিএম, ১ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার

করোনা মোকাবেলা করে অনেকটাই সচল দেশের গার্মেন্টস শিল্প। আর এর ইতিবাচক প্রভাবে ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে কেরানীগঞ্জের মিনি গার্মেন্টস পল্লী। তবে করোনার পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার এপারের সিম্পসন ঘাট দিয়ে এলাকাটির নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে এখানকার ব্যবসায়ীরা। 

পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অনেক শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাদের।

বুড়িগঙ্গার তীরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ-খেজুরতলার ঘিঞ্জি এই এলাকাটি দেশের অন্যতম বড় গার্মেন্টস পল্লী। তৈরি পোশাকের অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ করে থাকে এখানকার ছোট ছোট কারখানা। বিশেষ করে, জিন্স পোশাকের সিংহভাগই তৈরি হয় এখানে।  

করোনার কারণে গত রমজানে প্রায় পুরোপুরিই বন্ধ ছিল এই এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এখন সব কারখানা ও দোকানপাট খুলেছে। তবে ফেরেনি আগের মতো চাঙ্গাভাব।  

কারখানার ব্যবসায়ীরা জানান, বেশিরভাগই ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা করে। এই লোনের ভারে একদিকে জর্জরিত অন্যদিকে কোন বেচাবিক্রি নেই। ঘাট না থাকায় ক্রেতারা এ পাড়ে আসতে চায় না। তবে ঘাটটি খুলে দিলে ব্যবসাবাণিজ্য স্থিতিশীল হবে। 

এদিকে, এখানকার পণ্যের বেশিভাগ ক্রেতাই সিম্পসন ঘাট দিয়ে নৌকায় বুড়িগঙ্গা পাড় হতেন। ঘাটটি বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুসলিম ঢালি বলেন, ঘাটটি হঠাৎ করে বন্ধ হওয়ার কারণে আমরা ব্যবসাবাণিজ্যে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। প্রায় ৭০ ভাগ ব্যবসায়ী ক্রেতা এ পাড়ে আসতে পারছে না।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ স্বাধীন শেখ বলেন, হঠাৎ করে ঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের যে ব্যাংক লোন আছে তা পরিশোধ করতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আর এই ঘাট চালু না হলে আমাদের ব্যবসায়ী পল্লী ধ্বংস হয়ে যাবে।

তবে বিআইডব্লিউটিএ বলছে, দুই পাড়ের মধ্যে নৌ যোগাযোগ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ওয়াটার বাস দেয়া হবে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, যে লঞ্চগুলো আছে সেগুলো যাতে একসাথে থাকতে পারে এজন্য ঘাটের মাঝামাঝি একটা পল্টুন বসিয়ে এবং ঘাটটির পূর্ব ও পশ্চিমপ্রান্তে সিফট করে দিচ্ছি খেয়া নৌকাগুলোকে। আর ধীরে ধীরে খেয়ানৌকাগুলোর বিকল্প হিসেবে ওয়াটার বাস চালু করার।

এদিকে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দেয়ার কথা বলছে স্থানীয় প্রশাসন।  
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেব নাথ বলেন, তারা যদি তাদের আর্থিক অবস্থা বা তারা যদি মনে করে কোন সমস্যায় আছে। তারা যদি সেটি তুলে ধরে তাহলে আমরা তাদের প্রতিনিধি নিয়ে বসে কিভাবে সাহায্য করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করতে পারি।

দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সাথে তাল রেখে কেরানীগঞ্জের গার্মেন্টস পল্লীও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।

এএইচ/এমবি