ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

রাজশাহীর আট জেলার জন্য ডুবুরি মাত্র ৪ জন

রাজশাহী প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৩:৪৭ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২০ রবিবার

রাজশাহী অঞ্চলে একের পর এক পানিতে ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটলেও উদ্ধার অভিযানের জন্য ডুবুরি রয়েছে মাত্র চারজন। বিভাগের আট জেলা মিলে মাত্র চারজন ডুবুরি থাকায় ব্যহত হচ্ছে উদ্ধার কাজ। এছাড়া রয়েছে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবও। ফলে ডুবুরি নিয়োগ দেওয়া অতীব জরুরি বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বিভাগে ডুবরি সংখ্যা রয়েছে মাত্র চারজন। অথচ গত মার্চ মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৪২টি উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতে হয়েছে তাদের। এক একটি উদ্ধার কাজ করতে তিন চারদিনও লেগে যায়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন না করেই অভিযান বন্ধ রাখতে হয়।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দলের লিডার মো. নুরুন্নবী জানান, ‘রাজশাহীতে ডুবুরি দলের সংখ্যা খুব কম। আমার সাথে আর মাত্র তিনজন সদস্য রয়েছেন। এই সদস্যদের নিয়েই আমাদের পুরো রাজশাহী বিভাগে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করতে হয়। অনেক সময় খুলনা ও রংপুরেও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে যেতে হয়। বিশেষ করে লকডাউনের পর সবচেয়ে বেশি ডাক আসে। এক একদিনে দুই তিনটা করেও ডাক আসে। তখন আমরা বিপদে পড়ে যায়। এমনও ঘটনা ঘটে, একটা উদ্ধার কাজ শেষ না হতেই আরেকটি উদ্ধার অভিযানে যেতে হয়। তারপরও আমাদের সদস্যদের চেষ্টায় সেই উদ্ধার কাজ আমরা সম্পন্ন করি।’

এদিকে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে একের পর এক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটলেও নৌকায় কোনো নিরাপত্তা সামগ্রী রাখা হয়না। প্রতিটি নৌকায় লাইফ জ্যাকেট রাখার কথা থাকলেও বেশিরভাগ নৌকায় তা নেই। বিশেষ করে লকডাউনের পর নৌকা ভ্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীও বেশি তুলছেন মাঝিরা। রাজশাহীর পদ্মায় গড়ে ৫০টি নৌকায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নৌ-ভ্রমণ করেন। অথচ নিরাপত্তা ছাড়াই এসব নৌকা পদ্মায় চালান মালিক ও মাঝিরা।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পদ্মা নদীতে ১৩ জন যাত্রী নিয়ে নৌকা ডুবে যায়। নৌকার ১১ জন যাত্রী স্থানীয়দের সহায়তায় জীবিত উদ্ধার হলেও বাকি দুইজন নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও আরেকজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। দুই দিন উদ্ধার অভিযান চালানোর পর নিখোঁজদের শনাক্ত না করেই উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে ফায়ার সার্ভিস। শনিবার ঘটনাস্থলেই নিখোঁজদের লাশ ফেসে উঠেছে। এর আগে গত মার্চ মাসে পদ্মা নদীতে বর-কনেসহ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। তখন কনেসহ নয়জনের প্রাণহানি ঘটে। এভাবে একের পর নৌকা ডুবির ঘটনা বেড়েই চলছে। 

জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফিন্স রাজশাহীর সহকারী পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, ‘প্রতিটি জেলায় ডুবুরি নিয়োগের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাবনা দিয়েছি। এখন কবে সেটার বাস্তবায়ন হবে সেটা মন্ত্রণালয়ই জানে। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব কোনো নৌকা নেই। বিজিবি ও নৌ পুলিশের নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে।’
এআই/এসএ/