ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নওগাঁর সাপাহারে মাদক সেবনের শেষ পরিনতি শিকলবন্দী জীবন!

নওগাঁ প্রতিনিধি: 

প্রকাশিত : ১১:৩০ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২০ রবিবার

নওগাঁর সাপাহারে মাদক সেবনের শেষ পরিনতি জামিরুল ইসলাম (৩২) এখন শিকলবন্দী জীবন কাটাচ্ছে। মাদকাসক্ত হওয়ার একপর্যায় মস্তিষ্কবিকৃত হয়ে উৎশৃংখল হয়ে উঠায় তাকে গত ৬ মাস ধরে বাড়িতেই শিকলবন্দী করে রেখেছে তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে সাপাহার উপজেলার শিতলপাটি শ্রীধরবাটি গ্রামে। 

জামিরুল ওই গ্রামের শাহ জামাল হোসেনের ছেলে। জামিরুল ইসলামের স্ত্রী রোকশানা বেগম জানান প্রায় এক যুগ আগে জামিরুলের সাথে তার বিযে হয়। এসময়ে তাদের ২ ছেলে ও এক মেয়ে জন্মগ্রহন করে। বিয়ের প্রথম দিকে স্বামীর চলা-ফেরায় আচার আচরণ ভালো থাকলেও কিছুদিন পর বেরিয়ে আসে তার আসল রূপ। সে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এসময় সে আর মানুষ থাকে না। মাদক সেবন করে এসেই আমার উপর চালানো হতো শারিরীক নির্যাতন। এক সময় সিদ্ধান্তও নিয়ে ছিলাম তাকে তালাক দিয়ে পিতার বাড়িতে চলে যাব। কিন্ত ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে হয়েছে।

এভাবেই প্রায় এক যুগ কেটে গেছে কিন্তু স্বামীকে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরাতে পারিনি। উল্টো মাদক সেবনে বাধাঁ দিতে গিয়ে আমি কয়েক বার মৃত্যুর হাত থেকে বেচেঁ গেছি। কারন মাদক সেবন করার পর জামিরুল আর মানুষ থাকে না। সে পশু হয়ে উঠে। হাতের কাছে যা পায়, তা দিয়েই আমার উপর হামলা চালিয়ে আমার প্রাণ নাশের চেষ্টা চালায় জামিরুল। পরবর্তীতে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। মাদক সেবন করতে করতে জামিরুলের একপর্যায় মস্তিস্কবিকৃত ঘটে। 

বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করেছি। কিন্তু কোন ফল হয়নি। এখন মস্তিস্কবিকৃতির কারনে জামিরুল আরো উৎশৃংখল হয়ে উঠেছে। গ্রামের যাকে পায়,তাকেই মারপিট করে। শুধু তাই নয়, সন্তানদেরকেও নির্যাতন করে। আমরা ওতিষ্ঠ হয়েই বাধ্য হয়ে তাকে শিকল দিয়ে গত ৬ মাস ধরে বন্দী করে রেখেছি। রোকসানার বড় ভাই আকমল হোসেন বলেন, পাগল হবার আগেও জামিরুল নেশার টাকার জন্য পরিবারের উপর চড়াও হয়ে তাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করতো। বড় ধরণের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে তাকে শিকলে বন্দী করে রাখা হয়েছে।

তবে জামিরুলের স্ত্রী রোকসানা বেগমের আবেদন স্বামীর সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসতে সকলের সহায়তা কামনা করেছেন।
এব্যাপারে সাপাহার থানার ওসি (তদন্ত) আল মাহমুদ জানান, এবিষয়ে এর আগে থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি জানতে পারলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরকে//