হারিকেনের তাপ ও তুষে উৎপাদন হচ্ছে হাঁসের ছানা (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩১ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২০ সোমবার
নেত্রকোণার মদন উপজেলার কোটুরীকোণা গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে হারিকেনের তাপে ও তুষের মাধ্যমে ফুটছে হাঁসের ছানা। খরচ কম হওয়ায় এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতার মুখ দেখছে পুরো গ্রামের মানুষ।
কোটুরীকোণা গ্রামের আইনল হক। তার বড় ভাই হাদিস মিয়ার কাছ থেকে শিখে নেন হারিকেনের তাপ আর তুষ ব্যবহার করে হাঁসের ছানা উৎপাদন। এই পদ্ধতিতে এক হাজার ডিম থেকে বাচ্চা ফোঁটান। বিক্রি করে ভাল লাভও হয়। সেই থেকে তাকে আর পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি।
এই পদ্ধতিতে হাঁসের ডিম সংগ্রহ করে ১ দিন রোদে রাখতে হয়। এরপর একটা পুটলিতে তুষের মধ্যে ৩০টি করে ডিম নেয়া হয়। একসঙ্গে ৮ থেকে ৯টি পুটলি রাখা হয় মাটির চুঙ্গিতে। পাশে অন্য আরেকটি চুঙ্গিতে হারিকেন জ্বালিয়ে তাপ দেয়া হয় প্রতিদিন তিন ঘন্টা করে। উল্টে-পাল্টে দেয়া হয় ডিমগুলো। ১৮ দিন পর ডিমগুলো বের করে এনে ট্রেতে বা ধাপে ঢেকে রাখা হয় ১০ দিন। এই ২৮ দিনের মাথায় ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি ক্রেতারা আইনল হকের কাছ থেকে এক দিন বয়সী হাঁসের ছানা কিনে নেয় ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে।
স্থানীয় খামার মালিক আইনল হক জানান, তুষ পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুঁটিয়ে আমরা লাখ লাখ টাকা রোজগার করছি, কোন সমস্যা নেই। আমার দেখাদেখি এই গ্রামের সকলেই এই পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে গেছে।
গ্রামের অধিকাংশই মানুষই এই পদ্ধতিতে হাঁসের ছানা উৎপাদন করছেন। আর স্থানীয় কৃষি বিভাগ সহযোগিতা ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।
স্থানীয় খামার মালিকরা জানান, তুষ ও হারিকেন পদ্ধতিতে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। বাচ্চা উৎপাদন করে আমি অনেক লাভবান। এক মহিলা খামারী জানান, আমার হ্যাচারি দেখে তিন-চারটি গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
নেত্রকোণা জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মনোরঞ্জন ধর বলেন, টেকনিক্যাল সাপোর্ট আমরা দিয়ে যাচ্ছি। তাদেরকে কখনও ভ্যাকসিন বা চিকিৎসার ব্যাপারে কোন সমস্যা হলে আমরা সাথে সাথে সাপোর্ট দিচ্ছি।
এখন আশপাশের গ্রামগুলোতেও হচ্ছে এই পদ্ধতিতে হাঁসের ছানা উৎপাদন।
এএইচ/