বেনাপোল বন্দর দিয়ে আজো ফল আমদানি বন্ধ
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত : ০৬:১১ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০২০ সোমবার
সুবিধা বঞ্চিত হয়ে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন ফল আমদানি বন্ধ রেখেছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। রোববার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি হলেও ফল জাতীয় কোন পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। আজ সোমবারও আসেনি কোন ফলের ট্রাক।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ বেনাপোল কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়মসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ভারত থেকে আপেল, কমলা ও বেদানাসহ বিভিন্ন কাঁচা ফল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ফলে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে রয়েছে শতাধিক ফল বোঝাই ট্রাক। কোন কোন রফতানিকারক সেসব ট্রাক বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে ফল ভর্তি ট্রাক সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরে নিয়ে গেছে বলে এখানকার ফল ব্যবসায়ীরা জানান।
জানা যায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে যে সকল পণ্য আমদানি হয় তার বড় একটি অংশ রয়েছে ফল জাতীয় পঁচনশীল কাঁচামাল। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। বেনাপোল বন্দরে পৌছাতে পৌছাতো কিছু মালামাল পঁচে নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতি কার্টুনে শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে এক কেজি ছাড় দিয়ে আসছিল। হঠাৎ এ ছাড় বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা এপথে আমদানি বন্ধ রেখেছেন।
ফল আমদানিকারক বেনাপোলের রয়েল এন্টারপ্রাইজের মালিক রফিকুল ইসলাম রয়েল জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে ব্যবসায়ীরা বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানিতে স্বাচ্ছন্দ প্রকাশ করে থাকেন। দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে খাদ্য দ্রব্য জাতীয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বেনাপোল কাস্টমসের কড়াকড়ির কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ ছিল। চলতি বছরের প্রথম থেকে আবারো বেনাপোল বন্দর দিয়ে কাঁচামাল আমদানি শুরু হয়। পচনশীল পণ্যে কাস্টমস মানবিক কারণে কিছু সুবিধা দিতেন। সম্প্রতি ভারত থেকে আমদানিকৃত ফলে নতুন নিয়ম চালু করেছে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ। ফলের সাথে আসা কার্টুনেরও শুল্ক দিতে বলছে তারা। এ নিয়মে কাঁচা ফল আমদানিতে লোকসান হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ব্যবসায়ীরা। এজন্য এপথে ফল আমদানিতে অনিহা প্রকাশ করছেন আমদানিকারকরা। ভোমরা বন্দরে ফল ও কার্টুনের ওজন সুবিধা পাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীরা পেট্রাপোল বন্দরে-আসা ফলের ট্রাক ফিরিয়ে নিয়ে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরু করছেন বলে জানান তিনি।
আমদানি পণ্যের রাজস্ব গ্রহনকারী সোনালী ব্যাংক বেনাপোল শাখার ম্যানেজার আকতার ফারুক জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে খাদ্যদ্রব জাতীয় কাঁচামাল থেকে বড় একটা রাজস্ব আসতো। বর্তমানে ফল আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব আয় ঘাটতি হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, প্রতিদিন ভারত থেকে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক আপেল, আঙুর, বেদানা, কমলা, টমেটোসহ বিভিন্ন ফল আমদানি হয়ে থাকে। তবে ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীন ঝামেলায় দিনভর কোন ফলের ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি। ব্যবসায়ীরা যদি পণ্য আমদানি করেন তবে দ্রুত খালাসের সব ব্যবস্থা বন্দরে আছে।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাষ্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার সৈয়দ নেয়ামুল হক জানান, কাষ্টমস কোন নতুন নির্দেশনা জারি করেনি। কিছু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত সুবিধা না পেয়ে এপথে আমদানি করছেন না। নিয়ম মেনে আমদানি করলে পণ্য খালাসে কোন বাধা নেই বলে জানান তিনি।
আরকে//