থমকে গেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ৬ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৫৯ এএম, ৬ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার
তিন বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমার। দেশটি ফেরত নেয়ার প্রতিশ্রুতি ভেঙেছে বার বার। সময় বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে নানামুখী সংকট। এ অবস্থায় সমস্যা জিইয়ে না রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও জোরদার করার পরামর্শ বিশ্লেষকদের। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ মেয়াদী হলেও সমাধানে সুনির্দিষ্ট খসড়া পথনকশা তৈরিরও তাগিদ তাদের।
২৫ আগস্ট, ২০১৭ রাখাইনে নিরাস্ত্র রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুন দেয়াসহ মানবতাবিরোধী অপরাধযজ্ঞ। প্রাণ বাঁচাতে সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। সীমান্ত খুলে দিয়ে বিপন্ন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ।
৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয় ১১ লাখ রোহিঙ্গা। সময়ের চাকায় তিন বছর পার হয়েছে, এখনও দেশে ফিরতে পারেনি রাখাইনের ভূমিপূত্ররা। দ্বি-পাক্ষিক থেকে বহুপাক্ষিক বিষয়টি জাতিসংঘে এমনকি আর্ন্তজাতিক অপরাধ আদালতেও গেছে। দুই দফা ভেস্তে গেছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও।
নিরানব্বই ভাগ রোহিঙ্গাই দেশে ফিরতে চায়। ১ লাখ ২৩ হাজার ৯শ’ ১৯ জন রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে দেয়া হলেও ফেরত নেয়নি একজনকেও। নানা কৌশলে মিয়ানমার উল্টো দোষ চাপাচ্ছে বাংলাদেশের উপর। এত কিছুর পরও রাখাইনে গণহত্যা বন্ধ হয়নি।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেন, এই মুহূর্তে আবার গ্রাম পোড়াচ্ছে। এবার কিন্তু শুধু রোহিঙ্গা নয়, যে রাখাইন বুদ্ধিস্ট আছে তাদের বাড়িঘরও পোড়ানো হচ্ছে। তারা বলছে যে, এরা আরাকান আর্মিকে সহায়তা করে।
শরণার্থী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, প্রত্যাবাসনের যে দুটি পর্বকে আমরা দেখেছি তাতে বিশ্লেষকরা বলেছে সেটার পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। মিয়ানমার এমনভাবে জিনিসটাকে সাজালো যে পুরো দায়টা দিয়ে দিলো বাংলাদেশের উপরে।
তবে গেল তিন বছরের অর্জনকে একেবারেই খাটো করে দেখতে চান না বিশ্লেষকরা। প্রত্যাবাসনের রোডম্যাপ করার পরামর্শ তাদের।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বলেন, মিয়ানমার এখনও চাপের মুখে নত হয়নি। রিসেন্টলি আমরা দেখেছি যে মিয়ানমার কোর্টমার্শাল করছে। আমি মনে করি, আমাদেরকে এতদিনের কনসিস্টেন্টলি এবং কহেরানাটলি যে মোমেন্ট গ্যাদার করেছি সেটা ধরে রাখতে হবে।
শরণার্থী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, অর্থাৎ একটা রোডম্যাচ করতে হবে। এটা সমাধানের জন্য হয়তো পাঁচ বছর লাগতে পারে, এমনকি ১০ বছরও লাগতে পারে। এটির একটি স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন কর্মকৌশল নির্ধারণ করা।
বদলায়নি সরকারের অবস্থান। মিয়ানমারের সৃষ্টি করা সমস্যা তাদেরকেই সমাধান করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার এগ্রিও করেছে তারা ওদেরকে নিয়ে যাবে। চাচ্ছি তারা যেটা এগ্রি করেছে, প্রোমিজ করেছে সেটা দ্যাট সু অ্যাপ্লাই এবং সেজন্য আমরা বিশ্ববাসীর সমর্থন চাই, সহযোগিতা চাই। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা দরকার বিশ্ববাসীর।
বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার দ্বায়িত্ব নিয়ে মানবিকতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এই ভার বেশি দিন বয়ে বেড়ানো সত্যিই চ্যালেঞ্জের।
এএইচ/