মিলারদের নিয়ন্ত্রণে চালের বাজার (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:১১ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার
চাহিদার তুলনায় মজুদ বেশি, তারপরও ধাপে ধাপে বাড়ছে চালের দাম। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে খুচরা ব্যবসায়ী থেকে মিলার পর্যন্ত সকলেই পরস্পরকে দায়ী করছেন। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মজুদদারী আইনের ফাঁক-ফোঁকড়ে মিলারদের নিয়ন্ত্রণে থাকে ধান-চালের বাজার। তদারকিটা বাড়াতে হবে এখানেই। এদিকে, বাজার নিয়ন্ত্রণে নানামুখী উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।
এবছর বোরো মৌসুমে দেশে চালের উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। আগের বারের চেয়ে ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। আর আউশের আবাদও বাড়ে ১৮ শতাংশ। কৃষকরা আমনের আবাদ ঘরে তুলতে পারলে বোরোসহ চালের উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টনের ওপরে। যেখানে বছরে চালের চাহিদা ২ কোটি ৭২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
তবে চালে স্বয়ংসম্পূর্ণতার এমন পরিসংখ্যানের ইতিবাচক প্রভাব নেই বাজারে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ধাপে ধাপে বাড়ছে দাম।
বাজারের এমন পরিস্থিতির জন্য মিলারদের ধান মজুদ করাকেই দায়ী করছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ধান সিন্ডিকেটের হাতে থাকছে। কৃষকের হাতে তো থাকতেই পারে না। এতো হাই পাওয়ারের মিল যে, ৫ থেকে ৭ জেলার মাল একটি মিল ভেঙ্গে থাকে। এরকম শত শত মিল হয়েছে।
তবে মিলাররা দুষছেন, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার প্রবণতাকে।
মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী বলেন, ওদের কথাটা যদি বিশ্বাসযোগ্য হয় তাহলে আপনার কথাটাই সঠিক। তারা তো কেউ পরিসংখ্যানবিদ নয় বা তারা পরিসংখ্যান কোনভাবে করেওনি। শুধু আন্দাজে কথা বলে।
মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, এই সরকারের কতো নির্দেশ, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ, প্রশাসনের মনিটরিং হচ্ছে। এটাকে কি তারা মানছে, এরকম আলামত খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না।
দেশে প্রায় ৯৫০টি অটো রাইস মিল রয়েছে। যেখানে মজুদ থাকে হাজার হাজার টন ধান। আর উৎপাদিত চালের ২০ শতাংশই আসে শীর্ষ ৫০টি মিল থেকে। এখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ এই অর্থনীতিবিদের।
অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের মজুদ আইন অনুযায়ী একটা রাইস মিলের যে পরিমাণ ধান ভাঙানোর ক্যাপাসিটি সেই অনুযায়ী তারা ৫ গুণ ধান ও ৩ গুণ চাল তারা রাখতে পারেন। অনেক বড় কিছু রাইস মিলের এত বেশি উৎপাদন ক্ষমতা, তাদের মজুদও রাখতে এত বেশি যার ফলে তাদের হাতে কিন্তু অটোমেটিকভাবে কিছু মার্কেট পাওয়ার চলে আসে। আমাদেরকে এখন এই জায়গাটাতে ভাবতে হবে।
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানালেন খাদ্যমন্ত্রী। তাগিদ দিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও সক্রিয় হওয়ার।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রত্যেকটা জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছি। প্রতিদিনই জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেই চলেছি।
এবছর বোরো মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন। তবে সংগ্রহ হয়েছে ৯ লাখ ১০ হাজার টন।
এএইচ/