রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: পরাশক্তির মেরুকরণে নতুন সম্ভাবনা (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৫১ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার
অল্প সময়ের মাঝে বিশ্ব রাজনীতির নতুন মেরুকরণকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সুযোগ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি। যারা এ সংকট তৈরি করেছিল, তারাই এখন চাপে আছে। এ বাস্তবতায় বিশ্ব রাজনীতি মাথায় রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের পরামর্শ তাদের।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিধন অভিযানের তিন বছরে বিশ্ব রাজনীতি বদলেছে অনেকটাই।
চীন-রাশিয়ার ভেটোতে তিন তিন বার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণের চেষ্টা ভেস্তে গেছে। তখন ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশকেই পাশে পায়নি বাংলাদেশ।
সময় বদলেছে, বদলেছে বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপট। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য বিস্তারকে ভালো চোখে দেখছে না অনেক দেশ।
লাদাখে চীন-ভারত সীমান্ত সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে বিশ্ব রাজনীতিতে। পাকিস্তান-মার্কিন বন্ধুত্ব ভেঙে ভারত ও মার্কিন স্বার্থ এক হয়েছে। সেখানে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপিয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর বন্ধুত্ব শক্ত হয়েছে।
এখন পাকিস্তানের নতুন বন্ধু চীন। এই জোটে মিলছে ইরান, তুরস্কের মত দেশগুলো। চীনের সাথে মিয়ানমারে সামরিক সরকারের টানাপোড়েনও একটি দিক। আবার, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিও এখন টালমাটাল।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জোনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ বলেন, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পোলারাইজেশন হচ্ছে বৃহৎ।
আবার এটি হচ্ছে নতুন পোলারাইজেশন। যার ফলে সে বন্ধু দেশ মনে করছে যে, এখানে যদি অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজমান থাকে তাহলে তাদের যে অর্থনীতি বা অন্য কোন স্বার্থ আছে সেটি হাসিল হবে না। সে জন্য আগের দিনগুলোতে আমরা যে সহযোগিতা পাইনি হয়তো আগামী দিনে সে সহযোগিতা পেতে পারি। এই রোহিঙ্গার কারণে তারা যে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যতটুকু লাভবান হতে চেয়েছিল সামরিক সরকার এবং বেসামরিক রাজনীতি দলগুলো, এখন ওখানে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়ে গেছে। এখন তাদের স্বার্থ ক্রমান্বয়ে আক্রান্ত হচ্ছে এবং আগামীতে যদি এই সমস্যার সমাধান না হয় সেই স্বার্থ আরও আক্রান্ত হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সাহেব এনাম খান বলেন, এই জায়গাটাতে আসলে আমাদের যৌক্তিক আশা থাকা দরকার, যে রাষ্ট্রগুলোর ভূকৌশলগত গুরুত্ব মায়ানমারের কাছে কম তারাই কিন্তু বাংলাদেশের সাথে থাকবে। সুতরাং আমাদের এইভাবে চিন্তা করা দরকার যে, ভারত বা চীন যারাই আমাদের পক্ষে দাঁড়ায়নি এটা যেমন ঠিক, আর এটাও ঠিক যে তাদেরও একটা নিরাপত্তার বিষয় আছে।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে দেরি হলে গোটা অঞ্চলে জঙ্গিবাদসহ নিরাপত্তা ঝুঁকি দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের সন্দেহ যে এখানে অস্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বাড়বে। তাতে মায়ানমারেরও অসুবিধা এবং আমাদেরও অসুবিধা হবে। সেই সঙ্গে সারা অঞ্চলের কেউ বাদ পড়বে না এ থেকে।
বিশ্লেষকদের চোখে সঠিক পথেই আছে পররাষ্ট্রনীতি। পরাশক্তিগুলোর নতুন অবস্থানকে শুধু কাজে লাগানোই হবে মুন্সিয়ানার পরিচয়।
এএইচ/এমবি