ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

নাগর্নো-কারাবাখ: সমঝোতা চায় আর্মেনিয়া

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৫ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০২০ বুধবার

নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের যুদ্ধ দশম দিনে পড়ল। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধ থামার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। তারই মধ্যে এই প্রথম সমঝোতার কথা বললেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী। খবর ডয়চে ভেলে’র। 

আর্মেনিয়ার দাবি, বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখের রাজধানী কার্যত ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে আজারবাইজানের সেনা। আজারবাইজানও আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছে। তবে এরই মধ্যে সামান্য আশার আলো দেখা গিয়েছে। গত মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আজারবাইজান চাইলে নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে পারস্পরিক সমঝোতায় আসার কথা ভাবা যেতে পারে। অন্যদিকে ইরান ফের আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, যেভাবে বিভিন্ন গোষ্ঠী এই যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে তাতে অচিরেই দুই দেশের লড়াই একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান দুইটি দেশের সঙ্গেই ইরানের সীমান্ত রয়েছে। সোমবারের পরে মঙ্গলবার ফের নিজেদের সীমান্ত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইরান। ইরানের প্রেসিডেন্ট ফোনে কথা বলেছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন দেশের নানা গোষ্ঠী এই যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। ফলে যে কোন সময় একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ লেগে যেতে পারে এবং তা ঘটলে গোটা অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হবে। ফলে দ্রুত সমাধানের রাস্তা খুঁজে বার করা দরকার। বস্তুত এই যুদ্ধে বিভিন্ন গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ যে রয়েছে তা প্রথম থেকেই বলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সিরিয়ার সরকার স্বীকার করেছে, যুদ্ধে সিরিয়ার যোদ্ধারা অংশ নিয়েছে। আরও কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠীর অংশগ্রহণের কথাও শোনা যাচ্ছে। তুরস্কের সরাসরি যোগদান নিয়েও সরব হয়েছে আর্মেনিয়া।

এদিকে মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের চুক্তি রয়েছে। যার ভিত্তিতে আর্মেনিয়ার প্রয়োজনে রাশিয়া তাদের সাহায্য করবে। তিনি জানিয়েছেন, আজারবাইজান যুদ্ধ চালিয়ে গেলে রাশিয়া আর্মেনিয়াকে সাহায্য করবে এবং তার ফলে দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে বলেই তার বিশ্বাস। তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আজারবাইজান চাইলে পারস্পরিক সমঝোতার কথা ভাবা যেতে পারে। বস্তুত এই প্রথম সমঝোতার কথা বলা হলো।

কোন পথে সমঝোতা:
নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। কিন্তু সেখানে বসবাস করেন আর্মেনীয় মানুষ। আজারবাইজানের কর্তৃত্ব তারা মানেন না। ফলে সেখানে স্বাধীন সরকার গড়ে উঠেছে। যাদের পিছন থেকে সাহায্য করে আর্মেনিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই এই অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে। ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ফলে নতুন করে সমঝোতা করতে হলে দুই দেশকে নিজেদের স্বার্থের সঙ্গে আপস করতে হবে। নাগর্নো-কারাবাখের স্বাধীন সরকারের বক্তব্যও এ ক্ষেত্রে জরুরি। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যুদ্ধ থামাতে হলে সমঝোতার রাস্তায় যেতেই হবে দুইটি দেশকে। এবং যে ভাবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের উপর চাপ তৈরি করেছে, তাতে এ ছাড়া আপাতত তাদের আর কোনও উপায়ও নেই।

এমএস/