ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

ডিজিটাল প্রযুক্তির রূপান্তরের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে শিক্ষাব্যবস্থা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৮ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার

প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তিগত সুবিধা পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে আরো সমৃদ্ধ হতে পারে দেশের শিক্ষা কাঠামো। দেশের শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ, পলিসি মেকার এবং উন্নয়নকর্মীদের সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিতকরণ’ শীর্ষক অনলাইনে আয়োজিত এক ব্রেইনস্টর্মিং অধিবেশনে এমন পরামর্শ উঠে এসেছে। 

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট শিক্ষাব্যবস্থার সংকট থেকে উত্তরণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার এবং ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক শিক্ষাখাতের অগ্রগতির লক্ষ্যে এটুআই এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-এর যৌথ উদ্যোগে আজ উক্ত অনলাইন ব্রেইনস্টর্মিং অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞগণ বলেন, শিক্ষকদের যথাযথ প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদান, চলমান অনলাইন ক্লাসগুলোকে বিশেষায়িত অ্যাপস-এর মাধ্যমে আরো বেশী শিক্ষার্থীবান্ধব করে তৈরি করা এবং অনলাইন মাধ্যমে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা গেলে দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার চিত্র আমূল বদলে যাবে। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধির পাওয়ার শুরু থেকেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকলেও, সরকারের উদ্যোগে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অনলাইনে অব্যাহত রয়েছে শিক্ষাকার্যক্রম। 

তাঁরা আরো বলেন, এই অবস্থায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় সাধন ও যুগোপযুগী করা, ভবিষ্যতে সংকটকালীন সময়েও শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা এবং করোনা পরিস্থিতির পরবর্তী সময়ে যুগোপযুগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা কেবল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারি মাধ্যমেই নয়, বরং দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা কাঠামো থেকেই নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।

এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনির চৌধুরী-এর তত্ত্বাবধানে অধিবেশনের গ্রুপ প্রেজেন্টেশন পর্বে অংশগ্রহণ করেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের অতিরিক্ত পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা) ড. নাসিমা রহমান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ মহসিন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির এবং প্ল্যান ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশের শিক্ষা প্রধান মুরশিদ আক্তার। 

অধিবেশনে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম-এর প্রতিনিধি হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির কমিউনিটি স্পেশালিস্ট (ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া) সুচি কেদিয়া। বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরের প্রেক্ষিতে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষা কাঠামো বিশেষত বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় কিভাবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটানো যায়, এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ-এর বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রোগ্রাম ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের সেবা সহজিকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে চলেছে। এর পাশাপাশি দেশের সংকটকালীন পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় নানা ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

এছাড়াও অধিবেশনে দেশের শিক্ষা কাঠামোর উপর ভিত্তি করে পাঁচটি ব্রেকআউট পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তি ব্যবহারের ৩টি সর্বোৎকৃষ্ট প্রায়োগিক উপায়, মহামারিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে কিন্তু আলোচনায় আসেনি এমন তিনটি বিষয় এবং বৈশ্বিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনার উপর উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এটুআই-এর এডুকেশন টেকনোলজি এক্সপার্ট মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, এটুআই-এর পলিসি স্পেশালিস্ট (স্কিলস ফর এমপ্লয়িমেন্ট) আসাদ-ইজ-জামান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, শিক্ষকমণ্ডলী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন-এর প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ। এটুআই-এর পলিসি স্পেশালিস্ট (এডুকেশনাল ইনোভেশন) মো আফজাল হোসেন সারওয়ার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। 

আরকে//