শ্যালককে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিল দুলাভাই
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:২১ এএম, ১০ অক্টোবর ২০২০ শনিবার
বরগুনার সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙ্গা গ্রামে দুই শ্যালককে ঘুরতে নিয়ে একজনকে হত্যা করে বিষখালী নদীতে ফেলে দিয়েছে দুলাভাই। অন্যজনকে আহতাবস্থায় জীবিত উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, বিষখালী নদীতে ফেলে দেয়া সাত বছরের শ্যালক আব্দুল্লাহর মরদেহ একদিন পর ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে স্থানীয় জেলেরা। এদিকে দুলাভাইকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে মোল্লারহোড়া এলাকার বিষখালী নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় নিহত আব্দুল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে দুলাভাই দুই শ্যালক সাতবছর বয়সী আব্দুল্লাহ ও দেড়বছর বয়সী আফসানকে নিয়ে ঘুড়তে বেড়িয়ে নদী তীরে নিয়ে বড় শ্যালক আব্দুল্লাহকে হত্যা করে বিষখালী নদীতে ফেলে দেয়। এরপর একই পদ্ধতিতে আফসান নামের দেড় বছরের অপর শিশু শ্যালককে হত্যা চেষ্টার সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি দেখে আফসানকে আহত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করে এবং দুলাভাই মোসলেমকে হাতেনাতে আটক করে। এ সময় তার কাছে একটি দা পাওয়া যায়।
পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। মোসলেমের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। ঘটনার পর আটক অবস্থায় মোসলেম শিশু শ্যালক আবদুল্লাহকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে।
নিহত শিশু আবদুল্লাহর বাবা ছগীর জানান, ‘তিন মাস আগে অসুস্থ হয়ে তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এরপর আবদুল্লাহ ও আফসানকে তার মেয়েরা লাল পালন করতো। সপ্তাহখানেক আগে তার জামাতা মোসলেম বরগুনায় তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। এরপর বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে ডালভাঙা এলাকায় নানা শ্বশুড়বাড়ি বেড়াতে এসে তার দুই ছেলে আবদুল্লাহ ও আফসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় জামাতা মোসলেম। পরে সন্ধ্যার পরে তিনি জানতে পারেন তার বড় ছেলে আবদুল্লাহকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর মরদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে জামাতা মোসলেম। এছাড়াও ছোট ছেলে আফসানকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতে নাতে আটক করে।’
তিনি জানান, ‘মোসলেম আমার বড় মেয়ে ছবির জামাতা। ঢাকায় থাকা অবস্থায় আমার মেয়ে ও নাতীকে ঠিকমত ভরণ পোষণ দিতো না জামাতা মোসলেম। তাই মাস খানেক আগে মেয়ে ছবি তার সন্তান নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। এরপর মোসলেমও সপ্তাহখানে আগে এসে তার বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজী হইনি। এর জেরে আমার ছেলেকে নিয়ে হত্যা করেছে মোসলেম।’
অভিযুক্ত মোসলেম শিশু শ্যালক আব্দুল্লাহকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম, কিন্তু আমার স্ত্রী ও শ্বশুর নিয়ে যেতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি শ্যালক আবদুল্লাহ ও আফসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে বেড়াতে নিয়ে যাই। এরপর প্রথমে আব্দুল্লাহকে হত্যা করে লাশ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেই। এরপর আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করি।’
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ওসি কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত মোসলেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
এআই//এমবি