ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘দুর্যোগ মোকাবেলায় রোল মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০২ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গোলটেবিলে প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গোলটেবিলে প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান বলেছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সারা বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীগুলো এখানে সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনে ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কর্মসূচী পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে স্থানীয়দের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আনা অত্যন্ত জরুরী। এই প্রেক্ষিতে, প্রায় সাড়ে তিনশ দেশী বিদেশী সংস্থাসমূহের ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ ও বিশেষজ্ঞদের প্রত্যক্ষ গোলটেবিল আলোচনায় এই মতামত ব্যক্ত করা হয়। 

শনিবার (১৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসকে সামনে রেখে আয়োজন করা হয় এ গোল টেবিল আলোচনার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ফ্রেন্ডশিপের যৌথ উদ্যোগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীর দৈনিক যুগান্তর মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান। বক্তব্য রাখেন- মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব:) এবি তাজুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক মোঃ আতিকুল হক, ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক রুনা খান, ড. মাহবুবা নাসরিন, আহমদুল হক, ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র ডিরেক্টর কাজী এমদাদুল হক প্রমুখ। 

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ মোকাবেলায় রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচীগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যা অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি দুর্যোগ মোকাবেলায় এনজিওদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণের ২০টি জেলা অতি দুর্যোগপ্রবণ। দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের সমন্বয় সম্পর্কিত সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আলোকে দেশের তৃণমূল সংস্থাসমূহকে তাদের কর্মএলাকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিস্থিতি, অগ্রগতি ও করণীয় সম্পর্কে বক্তাগণ তাদের মতামত তুলে ধরেন। ফ্রেমওয়ার্কের এ্যকশন অনুসারে স্থানীয় ব্যবহারিক জ্ঞান এবং এর চর্চা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন বিভাগীয় উন্নয়ন কার্যক্রম ও বাস্তবায়ন নীতি, কর্মকৌশল, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। 

বক্তারা জানান, গ্রামের মানুষ দুর্যোগের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর কৌশল রপ্ত করেছে। তাই পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতির দেশ হয়েও এখানে দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এভাবে ক্ষতি কমানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা সম্ভব হয়েছে।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একটি রোল মডেল। প্রতিবছর বাংলাদেশ এক বা একের অধিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে থাকে। যেমন- বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, জলাবদ্ধতা, ভারীবর্ষণ, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি। জনসাধারণ, স্থানীয় সরকার এবং সুশীল সমাজ এসকল দুর্যোগের প্রাথমিক শিকার এবং জরুরি সাড়াদান ও দুর্যোগ কর্মসূচির সমন্বয়কারী। এই প্রেক্ষাপটে প্রায়শঃ স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারি প্রতিনিধি এবং জনসাধারণের মধ্যে একটি সেতুরূপে কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের সদস্যগণ স্ব স্ব এলাকার তথ্য ও আদিজ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে থাকে যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ঠিক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই স্থানীয় জনসাধারণের কথা ও মতামত শোনা প্রয়োজন। 

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য দেশ হিসেবে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসকে গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে বাংলাদেশ। আগামী ১৩ অক্টোবর এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে- দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সুশাসন, নিশ্চিত করবে টেকসই উন্নয়ন।

এনএস/