ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

পাখি ধরার অভিনব কৌশল, ডিবির হানা

নড়াইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১১:১৯ এএম, ১৬ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার

চারিদিকে পাখির ‘কিচিরমিচির’ শব্দ। কিছুটা থেমে থেমে, অবিকল পাখির মতো। তবে এই শব্দ অবিকল পাখির মতো মনে হলেও, প্রকৃতপক্ষে পাখি ডাকাডাকির শব্দ নয় এটা। ‘পাখি ধরা’র অভিনব অপকৌশল হিসেবে শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে ‘কিচিরমিচির’ আওয়াজ সৃষ্টি করে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জালে আটকাতে ফাঁদ হিসেবে রেকর্ডকৃত এই ‘কিচিরমিচির’ শব্দ ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করা হচ্ছে। 

পাখি শিকারিরা এই অপকৌশল ব্যবহার করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইছামতি বিলে প্রতিরাতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে আশপাশের এলাকাগুলোতে বিক্রি করছে।  

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বিষয়টি জানতে পেরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) অভিযানে পাঠান।

ডিবি পুলিশের এএসআই আনিসুজ্জামানের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে নৌকাযোগে ইছামতির সুবিশাল বিলে প্রায় দুই ঘণ্টা অভিযান পরিচালিত হয়।

তবে বিলের পানিতে ঘনঝোঁপ-ঝাড় ও আগাছায় নৌকা চলাচলে ধীরগতির সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়। এরই মধ্যে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়ে পাখি শিকারিরা। এ সময় পাখি শিকারের জাল, শব্দযন্ত্র, শিকারিদের আবাসস্থলসহ বিভিন্ন উপকরণ ধ্বংস করে দেয় পুলিশ এবং জাল থেকে একটি দেশি পাখি উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ‘রাতভর চলে পাখি শিকার। তবে শেষরাতে জালে বেশি পাখি আটকা পড়ে। প্রতিরাতে ধরা পড়ে ৩০ থেকে ৪০টি। আকার ও প্রজাতি ভেদে প্রতিটি পাখি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।’ 
 
ডিবি পুলিশের এএসআই আনিসুজ্জামান জানান, ‘নড়াইলের ইছামতি বিলে প্রায় ১০ একর জায়গাজুড়ে ৪ থেকে ৫ জন শিকারি বর্ষা মৌসুমে জালের ফাঁদ ও ‘কিচিরমিচির’ শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে পাখি শিকার করে আসছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাখি শিকারিরা পালিয়ে গেলেও উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। কেউ যদি আবার পাখি শিকারের চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) জানান, ‘পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় আমরা পাখির অবাধ বিচরণ সৃষ্টি করতে চাই। পাখি শিকারের মতো অপকর্মে কেউ জড়িত থাকলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

এআই/এমবি