ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

এবার সারাদেশে ৩০ হাজার ২২৫ মন্ডপে দুর্গাপূজা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার

সারাদেশে এ বছর ৩০ হাজার ২২৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবছর এ সংখ্যা ছিলো ৩১ হাজার ৩৯৮টি। গতবছরের তুলনায় এবার ১ হাজার ১৭৩টি মন্ডপে পূজা কম হচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগরে এ বছর পূজা মন্ডপের সংখ্যা ২৩৩টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ২৩৭টি। আর ঢাকা জেলায় পূজা হচ্ছে ৭৪০টি। গতবছরের চেয়ে এবার মাত্র দুটি মন্ডপে পুজা কম হচ্ছে।

এছাড়াও ঢাকা বিভাগে এবার ৭ হাজার ১৪টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতবছর অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৭ হাজার ২৭১টি মন্দিরে। গতবছরের তুলনায় চট্রগ্রাম বিভাগে এবার ৫৫০টি মন্ডপে পূজা কম হচ্ছে। এ বিভাগে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ৩ হাজার ৯০৬টি। খুলনা বিভাগে ৪ হাজার ৬৮৯টি, সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৬৪৬টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ হাজার ৫৮৪টি,বরিশাল বিভাগে ১ হাজার ৭০১টি, রংপুর বিভাগে ৫ হাজার ২৫০টি এবং রাজশাহী বিভাগে ৩ হাজার ৪৩৫ টি মন্ডপে এবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বাসস’কে এ তথ্য জানিয়ে বলেন করোনা মহামারির কারনে এবার দেশের অনেক মন্ডপেই দূর্গা পূজা হচ্ছেনা। তবে এসংখ্যা বাড়তে কমতে পারে বলেও জানান তিনি।

করোনা আতঙ্কের আবহেই আগামী ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এদিন দেবীর বোধন।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া অনুষ্ঠিত হয়। পুরাণমতে, এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে। মহালয়ার ৬ দিন পর পূজা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এবার তা অনুষ্ঠিত হয়নি। আশি^ণ মাস মল (মলিন) মাস হওয়ার কারণে এবার দুর্গাপুজা শুরু হচ্ছে প্রায় একমাস পর আগামী ২১ অক্টোবর বুধবার থেকে। পঞ্জিকা মতে, ২০২০ সালে মা দুর্গার আগমন হচ্ছে দোলায়। দোলায় চড়ে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে স্বামীর ঘর থেকে রওনা দেবেন তিনি। 

ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, দোলায় আগমন এর অর্থ মড়ক। ফলে পুজোর বা তার পরবর্তী সময়েও মহামারীর পরিস্থিতি বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মায়ের গমন এবার গজে। অর্থাৎ হাতিতে চড়ে মা বাপের ঘর ছেড়ে পাড়ি দেবেন স্বর্গে। গজে চড়ে গমনের ফল শুভ হয়। তবে এই বছরের পুজো অন্যান্য বছরের মত নয়। করোনা আতঙ্কের আবহেই এবার দেবীপক্ষের সূচণা হয়া। আর মহামারীর দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এবার হচ্ছে মাতৃ বন্দনা।

নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন পূজামন্ডপে সমবেত সবার স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ যে গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে , তা মেনেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন,স্বাত্বিক মতে ধর্মীয় বিধান মেনেই দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জীবন হচ্ছে আগে। নিজে সংক্রমিত হবোনা- অন্যদেরও হতে দেব না।

গাইডলাইনে করোনা সংক্রমণ রোধে এবার দুর্গাপূজায় শোভাযাত্রা ও প্রসাদ বিতরণ থেকে বিরত থাকার কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জনসাস্থ্য-১ অধিশাখার উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমদ ওসমানী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গাইডলাইন মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

নির্দেশনায় মন্দির প্রাঙ্গণে নারী-পুরুষের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ পৃথক ও নির্দিষ্ট থাকার কথা বলা হয়েছে।এছাড়াও পূজামন্ডপে আগত ব্যক্তিবর্গ নির্দিষ্ট দূরত্ব (কমপক্ষে দুই হাত) বজায় রেখে লাইন করে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করবেন এবং প্রণাম শেষে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সম্ভব হলে পুরো পথ পরিক্রমা গোল চিহ্ন দিয়ে নির্দিষ্ট করে দেয়ার কথাও নির্দেশনায় বলা হয়।

পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং ভক্তের সংখ্যা অধিক হলে একাধিকবার পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা করতে হবে উল্লেখ করে নির্দেশনায় আরো বলা হয় ,পূজামন্ডপে আগত সবার মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক। মাস্ক পরিধান ছাড়া কাউকে পূজামন্ডপে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।এছাড়াও মন্দিরের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেউ পূজামন্ডপে প্রবেশ না করা, হাঁচি ও কাশির সময় টিস্যু রুমাল বা কনুই দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যু বর্জ্য ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ঢাকনাযুক্ত বিনের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং জরুরিভাবে তা অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়। প্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা/ধুনচি নাচ এবং শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকার কথাও নির্দেশনায় উল্লেখ আছে। ধর্মীয় উপাচার ছাড়া অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোকসজ্জা বর্জন করতে হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়।

এমবি//