ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

ইজারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু উত্তোলন রাজশাহীতে

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৩:১১ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২০ শনিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতলি ইউনিয়নের রানীনগর মৌজার বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনির হোসেন বকুল নামের এক বালু ব্যবসায়ী ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বালুমহালটি ইজারা নেন। যা রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে।

ওই বালু মহালের নামে একটি সিন্ডিকেট রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ গঞ্জেবাড়ি ও সারাংপুরে পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মজুদ এবং পরিবহন করছে। এর মধ্যে সারাংপুরে ড্রেজারের মাধ্যমে এবং গঞ্জেবাড়িতে চরে ট্রাক নামিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আনারুল বিশ্বাস ও তার ছেলে রোমেন বিশ্বাস এই বালু সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যাদের কাছে এলাকাবাসীসহ প্রশাসনও অসহায় বলে অভিযোগ তুলেছেন ভূক্তভোগিরা।

প্রতিদিন অবৈধভাবে উত্তোলন করায় নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম। ভারি ট্রাক-লরি ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের কারণে এলাকার সড়কগুলো ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বালু পরিবহনের কারণে এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বালু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটির মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে গোদাগাড়ী প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এছাড়াও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে লোকসানের মুখে পড়েছেন গোদাগাড়ীর দুইটি বালুমহালের ইজারাদার। জাহাঙ্গীর আলম নামের এক বালু ব্যবসায়ী রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে প্রায় সোয়া চার কোটি টাকায় গোদাগাড়ীর ৫ ও ৬ মৌজার দুইটি বালুমহাল ইজারা নেয়।

সুলতানগঞ্জের গঞ্জেবাড়ি গ্রামের আয়নুল হক জানান, প্রশাসনের নাকের ডোগায় এই অবৈধ বালু কারবারে তারা অতিষ্ঠ। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারী দলের নেতাদের অনেকেই অবৈধ এই বালু কারবার সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু মহাল ইজারাদার মনির হোসেন বকুল বলেন, আনারুল বিশ্বাস তার বালু মহাল থেকে ৫০ পয়সা সেফটি বালু কিনে নিয়ে গিয়ে গোদাগাড়ীতে মজুদ করে। সেখান থেকে তিনি বালু বিক্রি করে।

গোদাগাড়ীর দুইটি বালুমহালের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে ইজারা নেয়ার অর্ধেক অর্থ তোলা সম্ভাব হবে না।

গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সজিকিউটিভ ম্যজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইজারায় গোদাগাড়ীর সারেংপুর ও সুলতানগঞ্জ এলাকায় বালু উত্তোলন ও মজুদ করতে নিষেধ করা হয়েছিলো। সে সময় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে বালু তুলার বিষয়টি নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরকে//