মাহমুদুল্লাহকে হারিয়ে ফাইনালে নাজমুল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪২ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২০ শনিবার
আফিফ হোসেন ধ্রুবর ৯৮ রান, মুশফিকের ফিফটি এবং এরপর বোলারদের নৈপুণ্যে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ ওয়ানডে টুর্নামেন্টের চতুর্থ ম্যাচে আবারো মাহমুদুল্লাহ একাদশকে হারালো নাজমুল একাদশ। আজ শনিবার টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় পর্বের লড়াইয়ে নাজমুল একাদশ ১৩১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে মাহমুদুল্লাহ একাদশ।
এর আগে প্রথম পর্বে মাহমুদুল্লাহ একাদশের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতেছিলো নাজমুল একাদশ। তিন ম্যাচ শেষে ২ জয়ে ফাইনালের পথে ভালোভাবে টিকে রইলো নাজমুল একাদশ। আর সমান খেলায় দ্বিতীয় হার নিয়ে রেস থেকে চ্যুতির পথে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী।
আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৪ রান করে নাজমুল একাদশ। ধ্রুব ৯৮ ও মুশফিকুর রহিম ৫২ রান করেন। এছাড়া শেষদিকে ইরফান শুক্কুর ৩১ বলে অপরাজিত ৪৮ রান করেন।
এ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেন মাহমুদুল্লাহ একাদশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট হাতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে নাজমুল একাদশের। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা। পারভেজ হোসেন ইমন ১৯, সৌম্য সরকার ৮ ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৩ রান করে আউট হন। সৌম্য ও শান্তকে শিকার করেন মাহমুদুল্লাহ একাদশের পেসার রুবেল হোসেন। ইমনকে ফেরান আরেক পেসার সুমন খান।
তবে আফিফকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা দারুণভাবে কাটিয়ে ওঠেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক। মাহমুদুল্লাহ একাদশের বোলারদের পরিকল্পনাকে আয়ত্বে নিয়ে দলের রানের চাকা ঘুরিয়েছেন মুশফিক-আফিফ।
দলের স্কোর দেড়শও অতিক্রম করেন মুশফিক ও ধ্রুব। তাদের ব্যাটিং দৃঢ়তায় লড়াইয়ে ফেরে নাজমুল একাদশ। দলকে বড় স্কোর এনে দেয়ার পথেই ছিলেন এই দুজন। মুশফিকের পর নেমেও সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায়ও পৌঁছে যান ধ্রুব। দারুণ মেজাজে খেলছিলেন তিনি। কিন্তু ৩৯তম ওভারের পঞ্চম বলে স্বপ্ন ভঙ্গ হয় আফিফের। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বলে লেগ বিফোর হন ধ্রুব। ১০৮ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৮ রান করেন এই তরুণ। চতুর্থ উইকেটে মুশফিকের সাথে যোগ করেন ১৪৭ রান।
৪২তম ওভারে বিদায় ঘটে মুশফিকেরও। মাহমুদুল্লাহ একাদশের পেসার এবাদত হোসেনের বলে আউট হন তিনি। ধীরলয়ে খেলা মুশফিক মাত্র ১টি চারে ৯২ বল খেলে নিজের ইনিংসটি সাজান।
দলীয় ১৮৭ রানের মধ্যে মুশফিক-ধ্রুবর আউটের পর নাজমুল একাদশকে লড়াই করার মত পুঁজি এনে দেন তৌহিদ হৃদয় ও ইরফান শুক্কুর। ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন শুক্কুর। ষষ্ঠ উইকেটে হৃদয়-শুক্কুর মিলে ৪৬ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন। ২৯ বলে ২৭ রান করে হৃদয় ফিরলেও ৩১ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৮ রান করেন শুক্কুর। ফলে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৬৪ রানের সংগ্রহ পায় নাজমুল একাদশ।
মাহমুদুল্লাহ একাদশের পক্ষে রুবেল হোসাইন ৫৩ রানে ৩টি, এবাদত হোসাইন ৬০ রানে ২টি ও সুমন খান ৫২ রানে ১টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ২৬৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ভালো শুরু করতে পারেনি মাহমুদুল্লাহ একাদশ। মাত্র ৪ রান করা ওপেনার ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে দেন নাজমুল একাদশের পেসার আল-আমিন হোসেন। শুরুর ধাক্কাটা আর সামালে উঠতে পারেনি মাহমুদুল্লাহ একাদশ। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ৯৭ রানে মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে তারা।
বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের ঘূর্ণির সঙ্গে পেসার আবু জায়েদ রাহির বোলিং তোপে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। লিটন দাস ২৭, মাহমুদুল হাসান ১৩ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১১ রান করে নাসুমের শিকার হন। আর মোমিনুল হককে (১৩) ও সাব্বির রহমাকে (১০) বিদায় দেন আবু জায়েদ।
সেইসঙ্গে টেল-এন্ডাররাও ব্যর্থতার পরিচয় দিলে ৩২.১ ওভারে ১৩৩ রানেই অলআউট হয় মাহমুদুল্লাহ একাদশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান।
নাজমুল একাদশের হয়ে নাসুম আহমেদ ২৩ রানে ৩টি, আবু জায়েদ ৩৪ রানে ৩টি ও রিসাদ আহমেদ ২৬ রানে ২টি উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাজমুল একাদশের আফিফ হোসেন ধ্রুব।
স্কোর কার্ড (টস- মাহমুদুল্লাহ একাদশ):
নাজমুল একাদশ: ২৬৪/৮, ৫০ ওভার (ধ্রুব ৯৮, মুশফিক ৫২, শুক্কুর ৪৮*, রুবেল ৩/৫৩, এবাদত ২/৬০)।
মাহমুদুল্লাহ একাদশ: ১৩৩/১০, ৩২.১ ওভার (নুরুল ২৮*, লিটন ২৭, নাসুম ৩/২৩, আবু জায়েদ ৩/৩৪)।
ফল: নাজমুল একাদশ ১৩১ রানে জয়ী।
এনএস/