মোংলা পোর্ট পৌরসভায় বইছে নির্বাচনী আমেজ
আবুল হাসান, মোংলা
প্রকাশিত : ০৭:১৬ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২০ রবিবার | আপডেট: ০৭:১৬ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২০ রবিবার
সমুদ্র বন্দর ‘মোংলা পোর্ট পৌরসভা’র নির্বাচন কবে হবে কেউই নিশ্চিত করে তা বলতে পারছেনা। এমনকি খোদ উপজেলা নির্বাচন অফিসও জানেনা এ পৌরসভায় ভোট কবে। তারপও বইছে নির্বাচনী আমেজ।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মেয়াদোত্তীর্ন এ পৌরসভায় কবে ভোট হবে তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না, এটা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বলেও জানান তিনি।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়েছে আরও পাঁচ বছর আগে। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে ছিল বলে আর নির্বাচন হয়নি।
এদিকে মেয়াদোত্তীর্ন মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসা মোংলা উপজেলা (সু-শাসনের জন্য নাগরিক) সুজন’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর আলম শেখ জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক মোংলা পৌরসভার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করে গত ৪ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় গেজেট প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী ওই মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব মোঃ ফারুক হোসেন লিখিতভাবে গত ১৪ অক্টোবর মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচনের পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানান।
আর একারনেই এ পৌরসভায় নির্বাচন হবে ভেবে একাধিক মেয়র প্রার্থীসহ কয়েক’শ সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঘুম হারাম করে দিয়েছেন। শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে দোয়া চেয়ে নানা রঙ্গের ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন সম্ভাব্য কিছু প্রার্থীরা। কেউবা আবার চায়ের দোকানে বসে ঝড় উঠাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে নিজের যোগ্যাতা বোঝাতে।
এরই মধ্যে সম্ভাব্য কোনও কোনও কাউন্সিলর প্রার্থী আবার জনসমর্থন আদায়ে খাদ্য পণ্য নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি দৌড়াচ্ছেন। তবে করোনাকালীন মহা দূর্যোগের এই সময়ে ওইসব প্রার্থীরা চুপ মেরে ঘরে বসে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এসব কাউন্সিলর প্রার্থীদের তামাশাকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছু নয় বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তবে ভোট কবে হবে-সে খবর কারও জানা নেই। কেউ বলছেন নভেম্বরে আবার কেউ ডিসেম্বর বা জানুয়ারীতে। তবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মেয়াদোত্তীর্ন এ পৌরসভায় কবে ভোট হবে তার কোন নির্দেশনা এখনও পাইনি।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির একক প্রার্থী থাকলেও ক্ষমতাসীন আ’লীগ থেকে শোনা যাচ্ছে সম্ভাব্য একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম। তারা প্রত্যেকই এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেদের ব্যস্ত রাখছেন।
পৌর আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান বলেন, পৌরসভায় নির্বাচনের ব্যাপারে আমার কর্মিরা চাচ্ছেন আমি মেয়র প্রার্থী হই, তবে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি। উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ও আ’লীগ নেতা মোঃ ইদ্রিস আলী ইজারদার ও পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান জসিম বলেন, দল মনোনয়ন না দিলে তারা নির্বাচন করবেন না। দলের যে কোনও সিদ্ধান্ত মেনেই তারা কাজ করবেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, মেয়র প্রার্থী হিসেবে দল থেকে আমি শতভাগ আশাবাদী-কারন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তরুন নেতৃত্বের গুরুত্ব দিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে আমার অভিবাবক খুলানা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার যে নির্দেশনা দিবেন আমি সে ভাবে কাজ করবো।
এদিকে আ’লীগের সম্ভাব্য কয়েকজন মেয়র প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা মেয়র জুলফিকার আলী ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে দীর্ঘদিন মেয়াদোত্তীর্ন পৌরসভার নির্বাচন আটকে রেখেছেন।
তবে অভিযোগের বিষয়ে মেয়র জুলফিকার আলীর দাবি, ‘স্থাণীয় কিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একের পর এক মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তিনি বলেন, ‘মামালা আমার ব্যাপার না, সরকারের ব্যাপার। এ সরকার নির্বাচন দিয়ে ফেললে এটা কেউ বাধা দিয়ে রাখতে পারেনা’।
জানা যায়, মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গেল ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারী। সে নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুলফিকার আলী।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বর্তমান পৌর মেয়রের মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় ছিল। ওই বছরের নভেম্বরে নির্বাচন তফশিল ঘোষনা করলেও সীমানা জটিলতার কারনে ভোট গ্রহন স্থগিত হয়।
আরকে//