ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

এসআর গ্রুপের গোপন বিক্রয় তথ্য: ভ্যাট গোয়েন্দার মামলা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:১৮ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর এসআর গ্রুপের আরো ৩টি রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা দায়ের করেছে। ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় এই মামলা করা হয়। 

প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে সুং ফুড গার্ডেন, ১৫/৫ বিজয় নগর, আকরাম টাওয়ার, ঢাকা; গার্লিক এন জিঞ্জার, ইম্পেরিয়াল আমিন আহাম্মেদ সেন্টার, (৭ম তলা), বাড়ি নং-৫৪, রোড-১০/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২১২; গার্লিক এন জিঞ্জার, দোকান নং-১, সি-৩৭, ১ম তলা, যমুনা ফিউচার পার্ক, ঢাকা-১২১২। 

ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এই ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩২.২৫ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়। এর মাধ্যমে এসআর গ্রুপ ৩টি রেস্টুরেন্টে ৭.১৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে আজ ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা। 

এর আগে একই গ্রুপের ফুড ভিলেজ ও ফুড ভিলেজ প্লাস নামক ২টি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের ২০০ কোটি টাকার বিক্রির তথ্য গোপন ও এর বিপরীতে ২৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করা হয়।

দি গ্রেট কাবাব ফ্যাক্টরির রাজধানীর গুলশান-২, যমুনা ফিউচার পার্ক ও ধানমন্ডি এলাকায় ৩টি অভিজাত রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধেও প্রায় ১৫ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়।এতে ঐ ব্যবসায়ী গ্রুপটির বিরুদ্ধে প্রায় ৩ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়।

ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল রাজধানীর নিকুঞ্জ-১ এর ৪৬ নম্বরের লেকড্রাইভের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সার ও ফেরদৌসী মাহবুব নেতৃত্ব দেন।

এতে এসআর গ্রুপের মালিকানাধীন এই ৩টিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত ও গোপনকৃত বিক্রয় তথ্য পাওয়া যায়।দীর্ঘ অনুসন্ধানশেষে আজ এই ৩টি রেস্টুরেন্টের ফাঁকির হিসাব চূড়ান্ত ও সেই সূত্রে ভ্যাট আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

ভ্যাট গোয়েন্দার প্রাথমিক অনুসন্ধান অনুযায়ী, সুং ফুড গার্ডেন (বিআইএন-০০১৩১৬২৯৭-০২০৮) নামীয় প্রতিষ্ঠানটি দাখিল পত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬.৩৪ কোটি।কিন্তু অভিযানে জব্দকৃত কাগজপত্র থেকে প্রাপ্ত প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ২১.৮০ কোটি টাকা।এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ২.৩২ কোটি টাকা। 

এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ বর্তায় ১.০২ কোটি টাকা। গার্লিক এন জিঞ্জার (বিআইএন-০০২১২৮৮৬২-০১০১) নামীয় প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৩.৪৬ কোটি। কিন্তু জব্দকৃত তথ্যে দেখা যায়, তাদের প্রকৃত মূসক আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ১৫.০৭ কোটি।এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ১.৮৩  কোটি টাকা।এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় মাসিক ২% হারে সুদ ৯০ লক্ষ টাকা আদায়যোগ্য হয়েছে। 

অন্যদিকে, গার্লিক এন জিঞ্জার (বিআইএন-০০১২১৫৮৮৩-০২০১) নামীয় প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে বিক্রয় ঘোষণা দিয়েছে ২.৩৩ কোটি টাকা।অনুসন্ধানে দেখা যায়, এর প্রকৃত ভ্যাট আরোপযোগ্য বিক্রয়মূল্য ৭.৫২ কোটি টাকা।এখানেও ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৭৯.৯৬ লক্ষ টাকা।এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় একইভাবে মাসিক ২% হারে সুদ আরোপযোগ্য ২৫.৯১ লক্ষ টাকা।

মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্যে উক্ত ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গার্লিক এন জিন্জার ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেট এবং বাকি দুটো ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে। 

এই ৩টিসহ এপর্যন্ত মামলা দায়েরকৃত অন্যান্য ৫টি রেস্টুরেন্টে মোট বিক্রির তথ্য গোপন পাওয়া গেছে ২৪৭.২৫ কোটি টাকা।আর এতে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৩৬.৫০ কোটি টাকা।

আরকে//