আবারো মাহমুদুল্লাহর কাছে হারলেন তামিম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৪৪ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার | আপডেট: ১১:৫৭ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার
তামিম একাদশকে ফের হারিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখলো মাহমুদুল্লাহ একাদশ। আজ সোমবার তিনদলীয় টুর্নামেন্টের পঞ্চম ম্যাচে তামিম একাদশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মাহমুদুল্লাহ একাদশ।
এই জয়ে ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালের রেসে টিকে রইলো মাহমুদুল্লাহ একাদশ। অন্যদিকে, ৩ খেলায় ৪ পয়েন্ট নাজমুল একাদশেরও। আর ৩ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে অনেকটাই ছিটকে গেল তামিম একাদশ। আগামী ২১ অক্টোবর লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে লড়বে নাজমুল ও তামিম বাহিনী। ঐ ম্যাচের পর পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হবে ফাইনালের লাইন-আপ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন তামিম একাদশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান।
তরুণ খেলোয়াড় তানজীদ হাসান তামিমকে নিয়ে ইনিংস শুরু করেন সিনিয়র তামিম। তৃতীয় ওভারেই ভাঙ্গে এই জুটি। মাত্র ১ রান করে প্রতিপক্ষ পেসার রুবেল হোসাইনের বলে বিদায় নেন জুনিয়র তামিম। পরের ওভারে বড় তামিমকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান আরেক পেসার আবু হায়দার রনি। ৯ রান করে আউট হন তামিম ইকবাল। ফলে ১১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তামিম একাদশ।
এই চাপকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেন রুবেল হোসাইন। এনামুল হক বিজয়কে (১) ও মোহাম্মদ মিঠুনকে (২) শিকার বানান বাগেরহাটের এই পেসার। ১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় তামিম একাদশ।
এই কঠিন অবস্থা থেকে দলকে খেলায় ফেরান ইয়াসির রাব্বি ও মাহিদুল অঙ্কন। মাহমুদুল্লাহ একাদশের বোলারদের দেখেশুনে খেলে ওই ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন রাব্বি ও অঙ্কন। সতর্কতার সঙ্গে ধীরলয়ে খেললেও সফল হয়েছেন তারা। ১১১ রানের জুটি গড়েছেন দুজনে।
জমে যাওয়া রাব্বি ও অঙ্কন জুটিকে ভাঙ্গতে পারছিলো না মাহমুদুল্লাহ একাদশের বোলাররা। তবে রান আউটের ফাঁদে পড়ে ভেঙ্গে যায় রাব্বি ও অঙ্কন জুটি। ৮১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ রান করেন রাব্বি। তার বিদায়ের কিছুক্ষণ পর অঙ্কনকেও থামিয়ে দেন সেই রুবেল। ১১০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন অঙ্কন।
দলিয় ১২৮ রানে রাব্বি ও ১৪৪ রানে অঙ্কনের বিদায়ের পর দলকে সম্মানজনক স্কোর এনে দেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। সপ্তম উইকেটে ৫৬ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন তারা।
মোসাদ্দেক ৩৯ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন। ২৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৮ রান করেন সাইফুদ্দিন। ফলে ৮ উইকেটে ২২১ রান জড়ো করে তামিম একাদশ।
মাহমুদুল্লাহ একাদশের পেসার রুবেল হোসাইন ১০ ওভারে ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন। এছাড়া এবাদত হোসেন ২টি ও রনি ১টি উইকেট নেন।
ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে ২২২ রানের টার্গেটে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় মাহমুদুল্লাহ একাদশ। ৮ রানের মধ্যে ২ উইকেটের পতন ঘটে তাদের। নাঈম শেখ ৩ রানে ও লিটন দাস ৫ রান করে ফেরেন। দু’টি শিকার ভাগাভাগি করেছেন তামিম একাদশের দুই পেসার সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
এরপর শুরুর ধাক্কাটা শক্ত হাতে সামাল দিয়েছেন মাহমুদুল হাসান ও ইমরুল কায়েস। তৃতীয় উইকেটে ৮৪ রানের জুটি গড়েন তারা। ওয়ানডে স্টাইলেই খেলেছেন ইমরুল। কিন্তু হাফ-সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় গিয়ে থামতে হয় তাকে। ৫৫ বলে ৭টি চারে ৪৯ রান করেন ইমরুল। এই জুটি ভাঙ্গেন খালেদ আহমেদ।
হাফ-সেঞ্চুরি তুলে আউট হন টেস্ট মেজাজে খেলা মাহমুদুল জয়। ১০১ বলে ৬টি চারে ৫৮ রান করে স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে ফেরেন এই তরুণ। ১৪৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান সোহান। এর আগে চতুর্থ উইকেটে মাহমুদুলের সাথে ৫৬ রান যোগ করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
এরপর উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানকে দলকে জয়ের কাছাকাছি রেখে ফিরতে হয় তাকেও। ততক্ষণে অবশ্য ক্যাপ্টেন্স নক খেলে ফেলেছেন রিয়াদ। ৮৭ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৭ রান করেন মাহমুদুল্লাহ।
দলের জয় থেকে ৯ রান দূরে থাকতেই মাহমুদুল্লাহকে থামান সাইফুদ্দিন। অধিনায়কের আউটে ম্যাচ শেষ করে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন সাব্বির রহমান। কিন্তু সুযোগটি হাতছাড়া করেন তিনি। ৩ রান করে ফেরেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজে ফেরা এই মারকুটে। তবে ৩৭ বলে অপরাজিত ২৬ রান করে ৫ বল বাকী থাকতে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন সোহান। খালি হাতে তার সঙ্গী ছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
তামিম একাদশের সাইফুদ্দিন ৪৯ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ একাদশের রুবেল হোসাইন।
এনএস/