ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

নার্সদের কর্ম ঘণ্টা নির্ধারণ জরুরি

আবুল উরওয়াহ

প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

অন্যান্য কাজের সাথে চিকিৎসা সেবা পেশার কিছুটা ভিন্নতা আছে। যেহেতু হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টাই রোগী ভর্তি থাকে এবং প্রায় ক্ষেত্রেই জরুরি বিভাগ চালু থাকে, সেহেতু একজন নার্সকে তিন শিফটে সকাল/বিকেল ৬ ঘণ্টা, রাতে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

সাপ্তাহিক একটি ছুটি বাদ দিলে মাসে প্রায় ২৬ দিন কাজ করতে হয়। সবাইকে প্রতিমাসে ৫টি রাত্রিকালীন ডিউটি করতে হয়। বাকি, ২১ সকাল/বিকেল সে হিসবে দাঁড়ায় কর্মঘণ্টা (৫×১২)= ৬০ ঘণ্টা, (৬×২১)= ১২৬ ঘণ্টা, সর্বমোট ১৮৬ ঘণ্টা। জরুরি সময়ে আবার ২৬ দিনের বাইরেও বিভিন্ন সময় বিকেল-সন্ধ্যা-রাতেও কাজ করতে হয়।

চাকরি বিধি অনুযায়ী একজন নার্স সপ্তাহে ৪০  ঘণ্টা কাজ করবেন। শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী  রোস্টার ডিউটির ক্ষেত্রে ৪০ ঘণ্টা ডিউটি  দৈনিক ৬ দশমিক ৫ ঘণ্টা করে ৬দিন করা যায়। আবার সেটা তিনি সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেও করতে পারেন, আবার দু’দিন ৮+৮ হিসেবে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা করে এবং একদিন ৮ ঘণ্টা, অর্থাৎ তিন দিনেও করতে পারেন। মোট কথা হল ৪০ ঘণ্টা করতে হবে।  

এখন কথা হল, সপ্তাহে ছয় দিন তিন শিফটে পুরো মাসে তিনি অতিরিক্ত ২৬ ঘণ্টা যে কাজ করেন, সেটা তার কর্মঘণ্টা বলে বিবেচিত হবে নাকি সেটা স্রেফ ‘এমনি এমনি’ কাজ?

মোদ্দা কথা হল, হাসপাতালে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা চালু রাখা। সেক্ষেত্রে প্রতিজন নার্সের সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করার চেয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি মোট ৪০ ঘণ্টা কাজ করছেন কী-না সেটা দেখা বেশি জরুরি। পৃথিবীর উন্নত দেশসমূহে এভাবেই চলে।

এর বাইরে যদি একজন নার্স কাজ করেন, তার জন্য তিনি অতিরিক্ত পারিশ্রমিক পান। ছুটির দিনে কাজ করলে পারিশ্রমিক আরও বেশি হয়। হাসপাতালে কে, কবে কখন কাজ করবেন সেটা স্থানীয়ভাবেই নির্ধারিত হয়। 

বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেটা হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন, তারাই এই ডিউটি রোস্টারটি নিয়মিত তৈরি করতে পারেন। 

এখন প্রশ্ন হল, বাকি সময়টা নার্স যেহেতু অতিরিক্ত কাজ করেন সেহেতু এ ধরনের কিছু পাবেন কী-না। এ কারণে নানাবিধ জটিলতা তৈরি হচ্ছে, তাই এ ব্যাপারে নার্সিং অধিদপ্তর থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দরকার।

সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে তার জন্য কি একজন নার্স বেতনের অতিরিক্ত পারিশ্রমিক পাবেন? অথবা বিকল্প হিসেবে তার জন্য বাড়তি কি কোন প্রণোদনা থাকবে? নাকি, বাড়তি সময়টা তাকে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই কাজ করতে হবে।

জনস্বার্থে তাই সরকারি উদ্যেগে কর্মঘণ্টা নির্ধারণ জরুরি।

লেখক- নার্সিং কর্মকর্তা

এমবি//