বিএসটিআই মান সনদের আওতাভূক্ত নতুন ৪৩টি পণ্য
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২৮ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২০ রবিবার
ভোক্তা সাধারণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে লো ফ্যাট মিল্ক, ফ্লেভারড্ মিল্ক, আইস ললি, ন্যাচারাল মেহিদী, ডিসওয়াশিং লিকুইড, লিকুইড টয়লেট ক্লিনার, নেইল পলিস, গোল্ড (স্বর্ণ), পাওয়ার লুমে তৈরি কটন শাড়ি, প্যাসেঞ্জার কার টায়ার ও রিম, হলো ক্লে ব্রিক্স ও ব্লকস্, পাওয়ার ট্রান্সফরমারসহ নতুন ৪৩টি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যকে বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসটিআই। আজ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এর ৩৪তম কাউন্সিল সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এতে সভাপতিত্ব করেন। এতে কাউন্সিলের প্রথম সহসভাপতি ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, দ্বিতীয় সহসভাপতি ও শিল্পসচিব কে এম আলী আজম, সদস্য-সচিব ও বিএসটিআই এর মহাপরিচালক ড. মো: নজরুল আনোয়ার (গ্রেড-১) উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, অর্থ বিভাগ, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় গুণগত শিল্পায়নের চলমান ধারা জোরদারে বিএসটিআইকে শক্তিশালীকরণ, আধুনিক যন্ত্রপাতিসম্বলিত ল্যাবরেটরির সুবিধার প্রসার, প্রাতিষ্ঠানিক জনবল বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ সুবিধা জোরদার, কর্তকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, যাতায়াত ও প্রণোদনার সুযোগ বাড়ানো এবং হালাল খাদ্যের রপ্তানি বাড়াতে বিএসটিআইকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় জেলা পর্যায়ে বিএসটিআই এর অফিস সম্প্রসারণ ও সেবাদান কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে বিদ্যমান ৮টি বিভাগীয় অফিসের পাশাপাশি আরও ১৩টি আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের মাধ্যমে মোট ৬৪টি জেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের বাইরে অবস্থিত ৪৩টি জেলায় মোবাইল কোর্ট, ফ্যাক্টরি পরিদর্শন ও সার্ভিল্যান্স পরিচালনার স্বার্থে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে নিজস্ব অফিস স্থাপন এবং সীমিত জনবল দিয়ে তা পরিচালনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
সভায় শিল্পমন্ত্রী বিশ্ববাজারের হালাল পণ্য রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন, এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বিএসটিআইকে দ্রুত হালাল পণ্যের মান নির্ধারণ ও মান সনদ প্রদানের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগ্যতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। এ লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠানটির জনবলের উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী নামধারী এক ধরণের সুবিধাবাদী শ্রেণি করোনা মহামারীর মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বাজারজাত করে টাকার পাহাড় গড়ে তোলার হীন কৌশল হাতে নিয়েছে। তারা মেয়াদ উত্তীর্ণ শিশুখাদ্য, ওষুধসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করে তাতে নতুন লেবেল লাগিয়ে বাজারে বিক্রির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করছে। এ ধরণের অপকর্মের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ নজরদারি, জরিমানা আদায় এবং অতিরিক্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন তিনি। তিনি শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত বিদেশ প্রশিক্ষণ টীমে বিএসটিআই’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করারও পরামর্শ দেন।
শিল্পসচিব বলেন, বাংলাদেশে শিল্পায়নে চলমান ধারার সাথে তাল মিলিয়ে বিএসটিআই এর মান নির্ধারণী কার্যক্রমকেও এগিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় অভ্যন্তরীণ বাজার হারানোর পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্যেও বাংলাদেশি পণ্য ক্ষতিগ্রস্থ হবে। করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ উন্নয়নের এক বিস্ময় উল্লেখ করে শিল্পসচিব বলেন, উন্নয়নের এ গতি অব্যাহত রাখতে তৃণমূল পর্যায়ে শিল্পায়ন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিএসটিআই এর মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ড জেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
আরকে//