মোংলা-খুলনা মহাসড়কে ভোগান্তির শেষ নেই
মোংলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:১৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২০ সোমবার
দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে মোংলা-খুলনা মহাসড়ক। খানাখন্দে ভরা এ সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। তারা সড়কের এমন বেহাল দশার জন্য কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, দেশের দ্বিতীয় মোংলা সমুদ্র বন্দর। এ বন্দরে আমদানী-রপ্তানী পণ্যসহ স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা উৎপাদনমুখী ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্থলপথে পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম মোংলা-খুলনা মহাসড়ক। মহাসড়কটির বন্দর কর্তৃপক্ষের ৫ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৫ কিলোমিটার। এই ১০ কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দে পরিণত হওয়ায় নানা দুর্ভোগে পড়ছে হাজার হাজার পণ্যবাহীসহ সকল প্রকার যানবাহন ও পথচারীরা।
এ সড়কে চলাচলকারী গাড়ি চালক বেলায়েত হোসেন, মুরাদ ও সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে যায়। ভারি যানবাহন চলাচল করায় সড়কের সংস্কার কাজ বেশিদিন টেকে না। এতে নানা ভোগান্তির পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে গাড়ির চাকা ও যন্ত্রাংশ।’
চালকরা আরও বলেন, ‘নিয়মিত গতানুগতিক মেরামত কাজ চললেও ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে ফের ভেঙে যায়।’
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ‘আমরা বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে এই সড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাই। কিন্তু সড়কটির অবস্থা খুবই করুণ। সড়কটি ব্যবহারে আমাদের যেমন সময় নষ্ট হয় তেমনি অর্থও। তাই কর্তৃপক্ষককে অনুরোধ করবো দ্রুত এ সড়কটি যেন মেরামত করা হয়।’
বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজিম কাওসার বলেন, ‘২২ ফুট চওড়া ও সরু থাকা সড়কটিতে এক লেনে গাড়ি চলে। এ কারণে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষার কারণে বিটুমিনের কাজ করা সম্ভব নয়। তাই সোলিং এইচ বি বি’র কাজ (ইটের সোলিং) চলছে।’
বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কের বাগেরহাটের দৈর্ঘ্য ৩০ কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে বেলাই ব্রিজ থেকে দিগরাজ বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বিটুমিন দিয়ে সংস্কার করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রধান বা অন্যতম কারণ হচ্ছে ওভারলোড। এছাড়া ১৯৮৪ সালে সড়কটি নির্মাণ কাজ হওয়ার পর থেকে অদ্যাবদি পুনরায় নির্মাণ এবং প্রশস্থকরণ করা হয়নি। বর্তমানে সড়কটিতে যানবাহন চলাচলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে আমরা রুটিন মেইন্টেন্সের আওতায় এর কাজ করবো।’
এদিকে চলমান সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করতে একটি প্রস্তবনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান।
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দর এলাকার আওতাধীন বাসস্ট্যান্ড থেকে দিগরাজ পর্যন্ত মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার সংস্কার কাজ কর্তৃপক্ষ দেখভাল করে থাকে। তবে সড়কের বর্তমান যে বেহালদশা তার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ খুব বেশি দায়ী নয়। বন্দর এলাকায় গড়ে ওঠা ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের পণ্য পরিবহনের জন্য সড়কের ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পণ্যবাহী ট্রাক ও যানবাহন চলাচল করায় সড়কটি সংস্কার করলেও দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।’
এছাড়া পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে পানি জমে সড়কে খানাখন্দ তৈরি হচ্ছে বলেও জানান বন্দর চেয়ারম্যান।
এআই//