ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

ধূমপান ছাড়ার কার্যকর উপায় ভেপিং

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২০ সোমবার

ভেপিংকে ধূমপান ছাড়ার অন্যতম কার্যকরী উপায় হিসেবে বরাবরই বিবেচনা করে আসছিলেন অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। এ সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণাতেও ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু ভেপিং নিয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্তের ফলে অনেকে পুরোনো ধূমপানে তথা প্রচলিত সিগারেটে ফের ঝুঁকে পড়ছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র ডেইলি বুলেটিনের এক নিবন্ধে ভেপিং নিষিদ্ধ করার অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব বিশদভাবে উঠে এসেছে।
 
ইন্ডিপেনডেন্ট ব্রিটিশ ভেপ ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র হাম্বারস্টোন যুক্তরাষ্ট্রে ভেপিং বন্ধের সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত হিসেবে মন্তব্য করে বলেন, এই পদক্ষেপ তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের সামনে হাল ছেড়ে দেওয়ার সামিল।
 
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং বিভিন্ন গবেষণার উপাত্তকে আমলে না নিয়ে বাংলাদেশে অনেকে ভেপিং নিষিদ্ধের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেছেন। এসব পদক্ষেপ কেবলই অন্ধ অনুকরণ। যুক্তরাজ্যে পরিচালিক ভেপিং সংক্রান্ত গবেষণাগুলো পর্যালোচনা করলে এমন প্রচারণা নিরেট ভুল পদক্ষেপ বলে মনে করেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সাজ্জাদ খান।
 
ডেইলি বুলেটিনের নিবন্ধে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভেপিংয়ের ওপর নানান বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে গেল এক বছরে। এর প্রভাবও হয়েছে নেতিবাচক। ভেপিং ব্যবহারের ফলে অনেকে প্রচলিত সিগারেটে নেশা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিলেন গেল বেশ কয়েক বছরে। কিন্তু হুট করে ভেপিংয়েও ওপর বিধি-নিষেধ আসায় তারা ফের ধূমপানে আসক্ত হচ্ছেন। বাড়ছে প্রচলিত সিগারেট বিক্রির হার। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। 
 
তবে যুক্তরাষ্ট্র ভেপিং নিষিদ্ধের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধাসেন্তর মাশুল, আর এর বিপরীতে সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নিউজিল্যান্ড। প্রচলিত ধূমপায়ী  হ্রাস করতে সম্প্রতি দেশটিতে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করে ভেপিং আইন পাশ করেছে।  আইনের ইতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। ভেপিংকে উৎসাহিত করার ফলে প্রচলিত সিগারেট বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। চলতি বছরে দেশটিতে দুই বছর আগের তুলনায় ৪১ কোটি সিগারেট কম বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্ড স্মোকিং নামে একটি দাতব্য সংস্থা।
 
ভেপিং নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মতো সময়োপোযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিলিপাইন। প্রচলিত ধূমপান হ্রাস করতে সম্প্রতি ভেপিং অনুমোদন দিয়ে বিল পাশ করেছে। কার্যকরভাবে প্রচলিত ধূমপান ছাড়ার জন্য ভেপিং বিল পাশ করা সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
 
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সাজ্জাদ খানের মতে বাংলাদেশেও ভেপিংয়ের ব্যাপারে সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত কাম্য। অন্যদেশের অন্ধ অনুকরণে ভেপিং নিষিদ্ধ না করে বরং বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপের মাধ্যমে এর বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে যাতে নিম্নমানের ভেপিং বাজারে না আসতে পারে। 
 
ই-সিগারেটকে উৎসাহিত করা হলে বাংলাদেশে ধূমপানের হার কমে আসবে বলে আশাবাদী অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। ভোক্তাদের পছন্দ নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া-ভিত্তিক সংগঠন কনজুমার চয়েস সেন্টারের সম্প্রতি এক গবেষণাতে দেখা গেছে, ভেপিং উৎসাহিত করা হলে দেশে ৬২ লাখের বেশি ধূমপায়ী প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে দিতে পারে।

আরকে//