ইস্পাহানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ১৮.২৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩১ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর চট্টগ্রামের ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির মামলা দায়ের করেছে। ভ্যাট ফাঁকির উদ্দেশ্যে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান ৪টি হচ্ছে, দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস, ইস্পাহানি মোড়, লালখান বাজার, চট্টগ্রাম (ভ্যাট নিবন্ধন নং-১৯০৯৮৭৪- ০৫০৩; পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি, ইস্পাহানি মোড়, লালখান বাজার, চট্টগ্রাম (ভ্যাট নিবন্ধন নং-০০০০১৮৪৮৮-০৫০৩); পিটস্টপ শো-রুম, ইস্পাহানি মোড়, লালখান বাজার, চট্টগ্রাম (ভ্যাট নিবন্ধন নং-০০১৯০৯৮৩৮-০৫০৩); এবং পিটস্টপ সুপার ষ্টোর, ইস্পানি মোড়, লালখান বাজার, চট্টগ্রাম (ভ্যাট নিবন্ধন নং- ০০১৯০৯৮৩৮-০৫০৩)।
ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এই ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮.২৭ কোটি টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটন করা হয়।এর মাধ্যমে ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠান সুদসহ প্রায় ১.৫০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল প্রতিষ্ঠানসমূহে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন, ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন।
ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে, দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৮৭,৭২,১৪৬ টাকা।কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১,২৯,৯৩,৮১৪। এক্ষেত্রে ৪২,২১,৬৬৮ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬,৩৩,২৫০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে ৪,৯৯,৫৬৯ টাকা সুদ প্রযোজ্য।
পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১২,৫৪,৬৯,৯৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১২,৯৭,২৩,৩০৭। এক্ষেত্রে ৪২,৫৩,৩৬১ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬,৩৮,০০৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৭,২১,১২৬ টাকা প্রযোজ্য।
অন্যদিকে, পিটস্টপ শো-রুম নামীয় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬,০৭,০৬,২৫৯ টাকা।তবে জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১৬,৪৫,২৪,৫১৫ টাকা। এতে দেখা যায়, ১০,৩৮,১৮,২৫৬ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৪৪,৩২,৪২১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
একইভাবে, এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে ৪১,৭১,৯১৪ টাকা সুদ আদায়যোগ্য।
পিটস্টপ সুপার ষ্টোর জানুয়ারি/১৮ হতে আগস্ট/২০ পর্যন্ত সময়ে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১,৮১,৯৬,১৪৫ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ৮,৮৫,৭৪,২৩৮।এক্ষেত্রে ৭,০৩,৭৮,০৯৩ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৩২,৭৫,১০১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৬,১৪,০৭৯ টাকা আদায়যোগ্য হবে।
অনুসন্ধানে ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠান সর্বমোট ৮৯,৭৮,৭৭৬ ভ্যাট পরিহার করেছে এবং এই পরিহারকৃত ভ্যাট এর উপর সুদ বাবদ ৬০,০৬,৬৮৮ টাকা প্রযোজ্য হবে।
ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান সমূহের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে যা ন্যায় নির্ণয়নের জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট
কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে।
কেআই//