ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৮ এএম, ৪ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯২৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার ঋষিকেশ দাশ লেনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পরিবারের সঙ্গে তিনি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় চলে যান। তবে জন্মভূমি ত্যাগ করে শরণার্থী হওয়ার মর্মবেদনা ঋত্বিক কোনোদিন ভুলতে পারেননি। আমৃত্যু এই যন্ত্রণা বয়ে বেরিয়েছেন। এই বেদনারই ছাপ পড়েছে তার সৃষ্টিতে। জীবনকালে ঋত্বিক ঘটক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন ৮টি।

ঋত্বিক ঘটকের প্রথম সিনেমা ‘নাগরিক’। এটি নির্মাণের পাঁচ বছর পর ১৯৫৭ সালে ঋত্বিক ঘটক নির্মাণ করেন তার দ্বিতীয় সিনেমা ‘অযান্ত্রিক’। এটি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চমকে যায় চলচ্চিত্র বোদ্ধা আর দর্শকেরা। সফল চলচ্চিত্রকার হিসেবে তিনি খ্যাতি লাভ করেন।

ঋত্বিক ১৯৫১ সালে ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যোগ দেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু নাটক লেখেন, অভিনয় করেন ও নির্দেশনা দেন। ‘অযান্ত্রিক’-এর পর ঋত্বিক নির্মাণ করেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬১) ও ‘সুবর্ণরেখা’ (১৯৬৫)। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে এসে নির্মাণ করেন তার বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। এটি বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ধ্রুপদী উপন্যাস থেকে নেয়া এ সিনেমাটি পেয়েছিল ব্যাপক প্রশংসা। এরপর ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিকের শেষ সিনেমা ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’।

এছাড়াও ঋত্বিক ঘটক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন ১০টি। আরও অনেকগুলো কাহিনীচিত্র, তথ্যচিত্রের কাজে হাত দিয়েও শেষ করতে পারেননি। ঋত্বিক ঘটক তার সৃষ্টির মাধ্যমেই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।

এরপরই ঋত্বিক ঘটক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। প্রায় তিন বছর মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৭৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে মারা যান।

১৯৬৯ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৫ সালে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
এসএ/