‘সংবিধান দিবস’ আজ (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১৮ এএম, ৪ নভেম্বর ২০২০ বুধবার
সদ্য স্বাধীন দেশ। জাতির পিতার নির্দেশনায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র এই চার মূল নীতিতে রচিত হয় বাংলাদেশের সংবিধান। আজ ৪ নভেম্বর ‘সংবিধান দিবস’। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়।
সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করেন।
সেই থেকে বার বারই রক্তাক্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান। জাতির পিতাকে হত্যার পর সংবিধান থেকে স্বাধীনতার চেতনাকে মুছে ফেলা হয়েছে। তবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর সংবিধানকে অনেকটাই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে।
সংবিধান দিবসে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান এখনো অনন্য দলিল। সংবিধানের মর্যাদা রক্ষায় নাগরিকদের সচেতন থাকার পরামর্শ আইনজ্ঞদের।’
সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এই সংবিধান জনগণের আশা আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।
সংবিধান গৃহীত হওয়ার মাত্র ৩২ মাসের মধ্যে হত্যা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতিকে। এরপর বার বার রক্তাক্ত করা হয়েছে সংবিধানকে।
সামরিক স্বৈরাচাররা অবৈধভাবে ক্ষতা দখল করে সংবিধানের মূল নীতিকেই ছেটে ফেলে দেয়। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় এসে সংবিধানকে অনেকটাই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান কেবল দেশের সর্বোচ্চ আইনই নয়, এতে বর্ণিত আছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল চরিত্র।
এ বিষয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীতে এতো কম সময়ের মধ্যে সংবিধান রচিত হয়নি। এতে পরিস্কার ভাবে লেখা আছে রাষ্ট্র কীভাবে চলবে? মানবাধিকার কীভাবে রক্ষিত হবে? এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা কীভাবে প্রতিফলিত হবে? প্রত্যেকে যারা যার ধর্ম পালন করে যাবে। বলা হয়ে থাকে এটা পৃথিবীর মধ্যে একটি অন্যতম সংবিধান।’
তবে বাহাত্তরের মূল সংবিধানে ফিরে যাওয়া জরুরী বলে মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।
তিনি বলেন, ‘দুইবার মার্শল ল হয়ে সংবিধানকে পরিবর্তন করা হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক। পরবর্তিতে যদিও সংবিধানকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হয়েছে অনেক। কিন্তু সম্পূর্ণ রূপে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।’
জনগণ যেহেতু সকল ক্ষমতার উৎস তাই সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব জনগণের- বলেই মনে করেন সাবেক এই আইনমন্ত্রী।
এসএ/