ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

যেভাবে নির্বাচিত হবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:২০ এএম, ৪ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

মার্কিন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল আসতে শুরু করেছে। ফলাফলে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন বাইডেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যগুলোর ফলের ওপর নির্ভর করছে কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন নাগরিকরা নির্বাচনের ফলের অপেক্ষায় আছেন। এখন পর্যন্ত ডো বাইডেন ২১৩টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ১১৮টি। এখানে বেশি ভোট পেলেই কি জয়ী হবেন বাইডেন। নাকি কম ভোট পেয়েও জয়ী হবেন ট্রাম্প। আসুন জেনে নেই মার্কিন নির্বাচন পদ্ধতি:-

যেভাবে নির্বাচিত হবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

নাগরিকদের সরাসরি ভোটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। বরং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি হলো পরোক্ষ। প্রথমে জনগণ ভোট দিয়ে ইলেকটোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলী নির্বাচিত করেন। 

এখানে একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য ব্যালট পেপারে কিন্তু প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নাম লেখা থাকে। আর একেক রাজ্যের নিয়ম অনুসারে নির্বাচক মণ্ডলীর নাম উল্লেখ্য থাকতেও পারে নাও পারে। জনগণ কোন নির্দিষ্ট প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার অর্থ হল তার দলের নির্বাচকমণ্ডলীর মনোনীত করা। পরবর্তীতে সেই নির্বাচকমণ্ডলী ভোট দিয়ে নির্বাচন করেন জনগণের পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে। তবে ফেডারেল আইন অনুসারে নির্বাচকমণ্ডলী কিন্তু জনগণের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য নন। অর্থাৎ নির্বাচক মণ্ডলী চাইলেও দলের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। 

তবে ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৪টি রাজ্যের আইনে এই ধরণের “বিশ্বাসঘাতকতা” অপরাধ হিসাবে গণ্য হয়। আর বর্তমান যুগে সচরাচর কোন নির্বাচককে নিজ দলীয় প্রার্থীর বাইরে অন্য কাউকে ভোট দিতে দেখা যায় না। তাই বলা যায় জনগণ যে প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থীর নির্বাচকমণ্ডলীদের ভোট দেবে তিনিই ঐ রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যাবেন।

যেভাবে কাজ করে ইলেকটোরাল কলেজ?

ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি রাজ্যের হাতে থাকে কিছু ভোট।

কোন রাজ্যের কতোজন ইলেকটোর বা নির্বাচক থাকবেন সেটা নির্ভর করে ওই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর।

সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে। ফলে এই রাজ্যে ইলেকটোরের সংখ্যা সর্বোচ্চ, ৫৫।

ছোট ছোট কিছু রাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়ার আছে তিনটি করে ভোট। আলাস্কা এবং নর্থ ড্যাকোটা রাজ্যের হাতেও তিনটি করে ভোট।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন প্রার্থীরা সারা দেশে ভোটারদের কাছ থেকে যেসব ভোট পান সেগুলোকে বলা হয় পপুলার ভোট এবং ইলেকটোরাল কলেজের ভোটকে বলা হয় ইলেকটোরাল ভোট।

কোনো একটি রাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি পপুলার ভোট পাবেন তিনি ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যাবেন।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, টেক্সাস রাজ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী যদি ৫০.১% ভোট পান, তাহলে ওই রাজ্যের ৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট তাদের পকেটেই যাবে।

ইলেকটোরাল কলেজের মোট ভোটের সংখ্যা ৫৩৮।

মাইন ও নেব্রাসকা এই দুটো অঙ্গরাজ্য বাদে বাকি সবগুলো রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট যোগ দিলে যে প্রার্থী ২৭০টি বা তারও বেশি ভোট পাবেন তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

মোট ইলেকটোরাল ভোট ৫৩৮ এর অর্ধেক ২৬৯ এবং জয়ী হয়ে হোয়াইট হাউজে যাওয়ার জন্যে আরো একটি ভোট এভাবেই ২৭০টি ভোট পেতে হবে একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য।

একেক রাজ্যের হাতে একেক সংখ্যক ভোট থাকার কারণে প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণার ব্যাপারে এমনভাবে ছক তৈরি করেন যেখানে তারা বেশি ভোট আছে এমন রাজ্যগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

গত পাঁচটি নির্বাচনের মধ্যে দুটোতেই কম পপুলার ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জর্জ বুশ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ কম পপুলার ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।

এমবি//