ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জার্মান প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৭ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:০৯ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি, বিশেষত ঈর্ষণীয় হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির অন্যান্য সূচকসমূহের অব্যাহত ঊর্ধ্বমুখী গতির প্রশংসা করেছেন।

বুধবার (১১ নভেম্বর) জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বেলভ্যু প্যালেসে (জার্মান প্রেসিডেন্টের সরকারী বাসভবন) এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফেডারেল প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে তিনি এই প্রশংসা করেন।

এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ছিল সীমিত পরিসরে গার্ড অব অনার, দর্শনার্থী বই-এ স্বাক্ষর, জার্মান প্রেসিডেন্টের নিকট পরিচয়পত্র হস্তান্তর, তাঁর সাথে সস্ত্রীক ফটো সেশন, বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ বাংলাদেশ ও জার্মানির পতাকা উত্তোলন এবং জার্মান প্রেসিডেন্টের সাথে দশ মিনিটের একান্ত বৈঠক।

একান্ত বৈঠকে জার্মান প্রেসিডেন্ট নতুন রাষ্ট্রদূতকে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রদূত জার্মান প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান এবং এখানে তার অবস্থানকালে জার্মান সরকারের সকল ধরনের সমর্থন কামনা করেন।

তিনি উল্লেখ করেন যে, জার্মানি ইউরোপের অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং তখন থেকেই বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।

জার্মান প্রেসিডেন্ট বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতি, বিশেষত ঈর্ষণীয় হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির অন্যান্য সূচকসমূহের অব্যাহত ঊর্ধ্বমুখী গতির প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে জার্মান প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি আইএমএফ কর্তৃক বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভারতের তুলনায় বেশি হবে বলে যে প্রক্ষেপন করা হয়েছে তাঁর উল্লেখ করেন।

জার্মানি ইউরোপে বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য, বিষয়টি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, চামড়া ও পাটজাত পণ্য, জাহাজ নির্মান, পর্যটন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ইত্যাদিসহ আমাদের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতসমূহকে তুলে ধরেন। এছাড়াও, বিদেশি বিনিয়োগ ও ব্যবসাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রণোদনাসমূহের ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত জার্মান প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন।

রোহিঙ্গা সঙ্কটের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্ষিপ্তভাবে অবহিত করার পরে, রাষ্ট্রদূত এ সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য জার্মান সরকার কর্তৃক ইতোমধ্যে প্রদত্ত রাজনৈতিক এবং আর্থিক সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এ সমস্যার কার্যকরি সমাধানের লক্ষ্যে, রাষ্ট্রদূত ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সমর্থনের পাশাপাশি, বিভিন্ন বহুপক্ষীয় ফোরামে জার্মানির সহযোগিতা লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি জার্মান প্রেসিডেন্টকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান। নতুন রাষ্ট্রদূত কর্তৃক উত্থাপিত ইস্যুগুলির জবাবে, জার্মান প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তার মেয়াদকালে তার পুরোপুরি সমর্থন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জার্মানিতে তার সাফল্য কামনা করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, তার দায়িত্ব পালনের মেয়াদে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। তিনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভাবনীয় সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসা ও বিনিয়োগের ব্যাপারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

তিনি বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের সুস্বাস্থ্য এবং বাংলাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।- বাসস

এসি