সংকটে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৫১ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার
অবসরের পর নানামুখী সংকটে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। পেনশন আর কল্যাণ বোর্ডের টাকা তুলতে ঢাকার অফিসে তাদের ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন। কর্তৃপক্ষ বলছে, জেলা পর্যায়ের শিক্ষা অফিসের চেয়ে কম লোক নিয়ে লাখো শিক্ষকের সেবা দিচ্ছেন তারা।
কিশোরগঞ্জের আরএস আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ড. গুলশানারা বেগম। অবসর আর কল্যাণ ফান্ডের টাকার জন্য ঘুরছেন বহুদিন। হার্টের রোগী গুলশানারার বুকের ব্যাথার চেয়েও টাকা না পাওয়ার ব্যাথাটা যেন অনেক বেশিই প্রকট।
ড. গুলশানারা বলেন, ‘হার্ট ও ডায়াবেটিসের রোগী হয়েও আমাকে ঘুরতে হচ্ছে। একবার কলেজে যাচ্ছি, কখনো ঢাকায় আসছি আবারও কখনো অবসর সুবিধা বোর্ডে যাচ্ছি। জীবনের একটি অর্জন, আর তা ভোগ না করেই কি আমি মরে যাবো?’
শেরপুরের শ্রীবদি উপজেলার আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক আব্দুল কাদেরের অবস্থাও তথৈবচ!
তিনি বলেন, ‘আমি একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। এখানে এসে বসার জায়গাটুকুও পেলাম না। কোন বিশ্রাগার, বাথরুম কোন কিছুই নেই।’
পলাশীর ব্যানবেইস ভবনের নিচতলায় জীর্ণশীর্ণ কটি রুমে অবসর আর কল্যাণ বোর্ডের অফিস। যেখানে সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নেই কোনো রেস্ট রুম। নেই ক্যান্টিন, মেডিকেল সুবিধা কিংবা প্রতিবন্ধীদের বসার জায়গা।
ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, ‘বড় বড় জটিল রোগে ভুগেও আমরা এখানে এসেছি। এখন পর্যন্ত টাকা পায়নি। অনেক দূর থেকে আসছি। যাওয়া-আসাটা খুবই দুষ্কর। এই বয়সে আর চলে না। কিন্তু এখানে জনবলের অভাব রয়েছে।’
কল্যাণ আর অবসর বোর্ডের সচিবেরাও বলছেন, শিক্ষকদের ভোগান্তি দূর করতে কিছু পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী বলেন, ‘অফিসের অবকাঠামো নেই। যারা আসেন তাদের বসার মতো জায়গা ও একটু ওয়াশরুম পর্যন্ত নেই। এই বয়বৃদ্ধ মানুষগুলোর জন্য একটা ভাল ওয়াশরুম থাকা দরকার। তাদের একটা বিশ্রামাগার থাকা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পেনশন পেতে অনেক সময় দালালের হাতে পড়ছেন শিক্ষকরা। এসব কিছু বিবেচনা করে অনলাইনে আবেদনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
আর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ শাহাজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আমার জনবল কাঠামোতে ৪৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। সেখানে প্রাকটিক্যালি আমরা আছি ১৫-১৬ জন। তাহলে কিভাবে আমি ৫ লাখ ৪০ হাজার শিক্ষককে সেবা দিবো? একটা জেলা অফিসেও এর চেয়ে বেশি স্টাফ থাকে।’
এআই//এসি