ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

কক্সবাজারে মিডওয়াইফারী কোর্স চালু করা জরুরী

ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দীন

প্রকাশিত : ০৪:১১ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২০ সোমবার | আপডেট: ০৪:১২ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২০ সোমবার

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বেষ্টিত বাংলাদেশের একমাত্র জেলা কক্সবাজার। এ জেলার ৮০ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করেন। কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল (কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অস্থায়ী ক্যাম্পাস) এতদ অঞ্চলের একমাত্র সর্বোচ্চ সেবাকেন্দ্র। জেলার ৮টি উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী নাইক্ষংছড়ি উপজেলার বিশাল জনগোষ্ঠী এ হাসপাতালের সেবার উপর নির্ভর করে। অধিকাংশ মানুষ গ্রামীণ জনপদে বাস করে বিধায় হাসপাতালে এসে সেবা নিতে পারেন না অধিকাংশ মায়েরা। 

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এখানকার আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীরা হাসপাতালে এসে সেবা নিতে সংকোচবোধ করেন। তাছাড়া কিছু কুসংস্কার বা বিশ্বাসজনিত কারণে তারা হাসপাতালে এসে সেবাটা নিতে চান না। ফলশ্রুতিতে প্রসূতি মায়েরা দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকিতে পড়েন এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়।

সম্প্রতি এ জেলায় শিশু জন্মের হার বেড়েছে। তাছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে জনসংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা অমূলক নয়। আমরা ঘরে ঘরে সেবাটা পৌঁছে দিতে পারলে মায়েরা উৎসাহ হারাবেন না এবং এসব প্রসূতি মায়ের মৃত্যু ঝুঁকিও কমবে। একইসঙ্গে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যও নিশ্চিত হবে। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি সে লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছেন।

ঘরে ঘরে প্রসূতি মায়ের সেবা পৌঁছে দিতে তাই মিডওয়াইফ তৈরীর বিকল্প নাই। এজন্য প্রয়োজন মিডওয়াইফারী কোর্স চালু করা। জেলার একমাত্র সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে বর্তমানে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্স চালু আছে। তবে ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারী কোর্স চালু করা একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। 

আশার কথা হলো- গেল ১২ নভেম্বর কক্সবাজার জেলায় সফরকালীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব সিদ্দিকা আক্তার খুব দ্রুত এ কোর্স চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।

আমরা কক্সবাজারবাসী এতে আশান্বিত। শুনেছি- কক্সবাজার জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ (স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব) জোর তাগিদ দিয়েছেন এ কোর্স চালুর ব্যাপারে।

পরিশেষে এইটুকু বলি- কোনও ক্লিনিকে আপনার জন্মের পর যাকে দেখেন, তিনি হচ্ছেন- সিএসবিএ, মিডওয়াইফ বা গাইনোকোলজিস্ট। মিডওয়াইফরা আমাদেরকে পৃথিবীতে আসতে সহায়তা করেন। মাকে তার সন্তানটাকে জন্মদান করাতে সহায়তা করেন। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে তাই মিডওয়াইফের বিকল্প নাই।

লেখক- নার্স ও পুষ্টিবিদ, কক্সবাজার। 

এনএস/